শত চাপের মাঝেও প্রোডাক্টিভ থাকবেন যেভাবে : “স্মার্টার ফাস্টার বেটার” -(বুক রিভিউ)


কিছু মানুষ আছে যারা হাজারটা কাজের মাঝেও চাপহীনথাকতে পারে। অন্যদের চেয়েতারা অনেক বেশি কাজ করলেও তাঁদের কখনও ক্লান্ত বা বিরক্ত অবস্থায় দেখা যায় না। এবং তাঁদের কাজের ক্ষেত্রে তাঁরা সেরা পজিশনে থাকেন। কিন্তু কিভাবে তাঁরা এই ব্যাপারটিকে সম্ভব করেন? – এটাই আমরা জানব চার্লস ডুহিগ এর এই বুক রিভিউয়ে।


পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের জন্যেই দিনে ২৪ ঘন্টা বরাদ্দ থাকে। এর বেশি একটি সেকেন্ডও কোনও কিছুর বিনিময়ে পাওয়া সম্ভব নয়।

কিন্তু আমাদের আশেপাশেই কিছু মানুষকে দেখা যায় যারা অন্যদের চেয়ে এই ২৪ ঘন্টা সময়কে অনেক বেশি কাজে লাগাতে পারেন। এমনভাবে তাঁরা কাজ করে যান, ও সফলতা পান – যা নিজের চোখে দেখেও বিশ্বাস করতে ইচ্ছা করে না।

এই মানুষগুলো সব ক্ষেত্রে অন্যদের চেয়ে অনেক বেশি এগিয়ে থাকেন। অর্থ, খ্যাতি, প্রভাব – সবকিছুতেই তাঁরা টপ পজিশন দখল করে রাখেন। কিন্তু এই মানুষগুলো কিভাবে এই অসম্ভব কে সম্ভব করেন? – এই প্রশ্ন লেখক চার্লস ডুহিগ এর মনেও জেগেছিল।

উত্তর খুঁজতে খুঁজতে তিনি এমন কিছু মানুষকে নিয়ে গবেষণা করেছেন, যাঁরা সবাই নিজের ক্ষেত্রে সেরা। খুব কাছ থেকে দেখেছেন তাঁদের জীবনযাপন। তারপর খুঁজে পেয়েছেন বেশকিছু কমন বিষয় যা তিনি তাঁর বেস্টসেলার Smarter Faster Better” বইয়ে সুন্দর ভাবে দিয়েছেন।

বইটির পৃষ্ঠা সংখ্যা ৪০০ এর কাছাকাছি, পড়তে অনেক সময় লাগবে – তাই আপনার সুবিধার জন্য লড়াকু টিম বইটির মূল বিষয়গুলোকে এই আর্টিকেলে তুলে এনেছে রিভিউ আকারে।

তো চলুন জেনে নেয়া যাক কিভাবে দিনের ২৪টি ঘন্টা আপনি আপনার সর্বোচ্চ কাজে লাগাতে পারবেন:

যেভাবে আইডিয়াটি লেখকের মাথায় এল:

এই বইটির আগে চার্লস আরও একটি বেস্ট সেলিং বই লিখেছিলেন “The Power of Habit” নামে। সেই বইটি লেখার সময় থেকেই প্রোডাক্টিভিটি  – বা যে কোনও কাজে সম্ভাব্য সর্বোচ্চ ফলাফল পাওয়ার করার কৌশলের বিষয়ে তিনি আগ্রহী হয়ে ওঠেন।

পাওয়ার অব হ্যাবিট বইটির দারুন সাফল্যের পর বিভিন্ন বড় বড় কাজের সুযোগ ও অফার তাঁর কাছে আসা শুরু করে। ফলে তাঁর কাজের পরিমান ও ব্যস্ততা বেড়ে যায়। সেইসাথে তাঁর ওপরে নানান ধরনের নতুন নতুন দায়িত্বও আসতে শুরু করে।

এতসব কাজ ও দায়িত্বের মাঝে তাল রাখতে গিয়ে তাঁকে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছিল। কাজ যত বাড়ছিল, তাঁর হাতে সময়ও তত কমছিল। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে তিনি কাজগুলো ভালভাবে শেষ করতে পারছিলেন না।

এতে করে তাঁর productivity কমে যেতে শুরু করেছিল। এতসব কাজের ভিড়ে তিনি নিজের বা নিজের পরিবারের জন্য কোনও সময়ই বের করতে পারছিলেন না, যার ফলে তিনি ব্যক্তিগত জীবনে অসুখী হয়ে যাচ্ছিলেন। নিজের মত করে উপভোগ করার মত কোনও সময়ই তিনি হাতে পাচ্ছিলেন না।

এমনই একটি সময়ে তাঁর দেখা হয় অতুল গেওয়ান্ডের সাথে। অতুল একজন চিকি‌ৎসক। স্পেশালিস্ট সার্জন। দারুন সফল এই মানুষটি চিকি‌ৎসক হওয়ার পাশাপাশি নিউ ইয়র্ক টাইমস এর স্টাফ রাইটার হিসেবে কাজ করতেন। সেইসাথে তিনি ছিলেন একজন বেস্ট সেলিং লেখক, হার্ভার্ডের প্রফেসর, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (world health organization) উপদেষ্টা। এত বেশি ব্যস্ততার পরও তিনি তাঁর প্রতিটি কাজেই ছিলেন দারুন সফল। সর্বোচ্চ প্রোডাক্টিভিটির সাথে তিনি প্রতিটি কাজ করতে পারতেন।

আবার নিজের পেশা নিয়ে দারুন ব্যস্ততার মাঝেও তিনি পরিবারকে যথেষ্ঠ সময় দিতেন, ছেলেমেয়েদের সাথে রক কনসার্টে যেতেন; এমনকি মাঝে মাঝে স্ত্রীকে নিয়ে নিয়ম করে ছুটিও কাটিয়ে আসতেন! পাশাপাশি তিনি নিজের জন্য একান্ত কিছু সময়ও কাটাতেন। – মোটকথা তিনি তাঁর পেশাগত কাজগুলো সুন্দর ভাবে করার পাশাপাশি তাঁর নিজের জীবন ও সফলতাকে পুরো মাত্রায় উপভোগ করছিলেন।

ডা. গেওয়ান্ডকে কাছ থেকে দেখার পর পর লেখক চার্লস ডুহিগ জানতে পারলেন আরও বেশকিছু মানুষ আছেন যাঁরা তাঁদের কাজগুলো একই ভাবে সর্বোচ্চ দক্ষতা ও প্রোডাক্টিভিটির সাথে করে থাকেন, আবার নিজের জীবনকেও উপভোগ করেন পুরো মাত্রায়।

যে কারনে সাধারন মানুষের চেয়ে তাঁদের সাফল্যের মাত্রাটা অনেক বেশি। এটা জানার পর লেখক ঠিক করলেন তিনি ব্যাপারটি নিয়ে আরও গবেষণা করবেন। ডা. গেওয়ান্ডের মত এমন আরও বেশিকিছু মানুষের সাথে তিনি বেশি করে সময় কাটাতে শুরু করলেন। সাক্ষা‌ৎকার নিলেন বহু সফল ও প্রোডাক্টিভ মানুষের। এদের মধ্যে ছিলেন পাইলট, মিলিটারি জেনারেল, বিজ্ঞানী, ব্যবসায়ী সহ অনেকে।

এইসব মানুষদের কাছে তিনি সাফল্য ও প্রোডাক্টিভিটির ব্যাপারে অনেক কিছুই জানতে পারলেন। এবং খুঁজে পেলেন এমন কিছু কমন বিষয় যা এই মানুষদেরকে এতটা প্রোডাক্টিভ ও সফল করে তুলেছে

এদের সবাই কিছু নির্দিষ্ট বিষয়ে ফোকাস করে তাঁদের কাজগুলো গুছিয়ে নেন। বিষয়গুলো তিনি যত্নের সাথে তাঁর বইয়ে তুলে এনেছেন যেগুলোতে ফোকাস করতে পারলে যে কেউই এইসব অসাধারন মানুষদের মত ‘সুপার প্রোডাক্টিভ’ হতে পারবেন। হয়ে উঠবেন “Smarter Faster Better”;

আজকে আমরা মূলত সেই মূল বিষয়গুলো নিয়েই আলোচনা করব। যাতেকরে আপনিও বিষয়গুলো মাথায় রেখে কাজ করে যেতে পারেন। চলুন তাহলে জেনে নিই ‘সুপার প্রোডাক্টিভ’ মানুষেরা কিভাবে এত সুন্দর ভাবে নিজেদের কাজগুলো ম্যানেজ করেন।

মোটিভেশন: পাওয়ার অব চয়েস

একজন মানুষের পক্ষে একা একসাথে তিন-চারটি কাজ করা সম্ভব নয়। তিনি যতই প্রতিভাবান ও দক্ষ হোন না কেন, একজন মানুষ যদি একই সময়ে একাধিক কাজ করতে যান – তবে সেই কাজটির ফলাফল কখনওই খুব বেশি ভালো হবে না।

অনেক মানুষেরই এমন ব্যস্ততা থাকে যাতে করে তাঁদের একই সময়ে একের বেশি কাজ করতেই হয়।

মনে করুন আপনি একটি কোম্পানীর সিইও। আপনাকে প্রোডাকশনও দেখতে হচ্ছে, মার্কেটিং এর ওপরও নজর রাখতে হচ্ছে, সেইসাথে বাইরের ক্লায়েন্ট এর সাথেও যোগাযোগ রাখতে হচ্ছে।

আপনি এই কাজের দায়িত্বগুলো অনেকের মাঝে ভাগ করে দিলেও প্রতিটি কাজের ওপর আপনাকে সব সময়েই চোখ রাখতে হচ্ছে যাতে প্রতিটি কাজই ঠিকমত হয়।

এখন ধরুন আপনার হাতে একটি জটিল প্লানিং এর কাজ আছে – যা ভালভাবে করতে আপনার পুরো মনযোগ সেই কাজে থাকা প্রয়োজন। কিন্তু আপনি তা পারছেন না অন্য কাজগুলো নিয়ে টেনশনের কারনে।

ceo

কিন্তু আপনি চাইলে একটি বিশেষ পদ্ধতি ব্যবহার করে এই কাজটি সুন্দর ভাবে করতে পারেন। পদ্ধতিটি বোঝার জন্য আগে চলুন কয়েকটি গবেষণা ও তার ফলাফল জেনে নিই, এতেকরে পদ্ধতিটি বুঝতে আপনার অনেক সুবিধা হবে।

মানুষের মোটিভেশন লেভেল কোন সময়ে সবচেয়ে বেশি কাজ করে – তা বের করতে কয়েকজন বিজ্ঞানী মিলে কিছু মানুষের ওপর একটি গবেষণা করেন একটি অতি সাধারন কম্পিউটার গেমের মাধ্যমে।

অংশগ্রহণকারীদের কম্পিউটারের সামনে বসিয়ে ১ থেকে ১০ এর ভেতরে যে কোনও একটি সংখ্যা মনে মনে বেছে নিতে বলা হয়। এরপর কম্পিউটারে ১ থেকে ১০ এর মধ্যকার একটি নম্বর ভেসে ওঠে। যদি অংশগ্রহণকারী পাঁচ এর নিচে কোনও সংখ্যা ধরে নিয়ে থাকে এবং মনিটরে ভেসে ওঠা সংখ্যাও যদি পাঁচ এর নিচে হয় – তবে সেই রাউন্ডে অংশগ্রহণকারীকে জয়ী ধরে নেয়া হতো।  কিন্তু ধরে নেয়া সংখ্যা পাঁচের বেশি, কিন্তু মনিটরে ওঠা সংখ্যা পাঁচের কম হলে অংশগ্রহণকারী পরাজিত হত।

গেম খেলার সময়ে গবেষকরা প্রত্যেক গেমারের মস্তিষ্কের গতিবিধি স্ক্যানারের সাহায্যে মনিটর করলেন।

দেখা গেল যখন গেমাররা কোন সংখ্যা ধরবেন সেই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিচ্ছিলেন তখন তাঁদের মস্তিষ্কের “striatum” অংশ দারুন এ্যাকটিভ হয়ে উঠেছিল। এই অংশটি আমাদের মাঝে মোটিভেশন সৃষ্টি করে।

এই অংশ যত এ্যাকটিভ থাকে আমরা একটি কাজের প্রতি ততটাই মোটিভেটেড থাকি। এরপর গেমাররা মনে মনে সংখ্যা নির্ধারণ করার পর যখন কম্পিউটারের পালা এল সংখ্যা নির্ধারণ করার, তখন দেখা গেল গেমারদের মস্থিষ্কের মটিভেশনাল অংশটি প্রায় পুরোপুরি থেমে গেছে।

– এই গবেষণা থেকে বিজ্ঞানীরা এই সিদ্ধান্তে এলেন যে, একজন মানুষের যখন বেছে নেয়ার বা সিদ্ধান্ত নেয়ার স্বাধীনতা থাকে তখন তার মোটিভেশন লেভেলও অনেক উপরে থাকে।

একজন মানুষ যখন কোনও কাজ করতে গিয়ে দেখে যে সেই কাজে তার নিজের মত করে তেমন কোনও সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা নেই, বা কোনও কিছু বেছে নেয়ার মত স্বাধীনতা তার নেই – তখন সেই কাজের প্রতি তার মটিভেশন বা উ‌ৎসাহও নিচের পর্যায়ে নেমে আসে।

কিন্তু যখনই সেই মানুষটি জানে কোনও একটি কাজে বা বিষয়ে তার নিজের মত করে সিদ্ধান্ত নেয়ার স্বাধীনতা আছে – তখন তার উ‌ৎসাহ বা মটিভেশন দারুন ভাবে বেড়ে যেতে থাকে।

১৯৮০ সালে কয়েকজন ফ্রেঞ্চ নিউরোলজিস্টও একটি পরীক্ষায় একই ধরনের ফলাফল পান

তাঁরা এমন কিছু সফল মানুষকে খুঁজে বের করেন যাঁরা হঠা‌ৎ করেই কাজের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন।এরা ‘এক সময়ে’ দারুন উ‌ৎসাহের সাথে কাজ করে সাধারন অবস্থা থেকে  দারুন সফল মানুষ হয়েছিলেন – কিন্তু এখন আর তাঁদের কাজ করার কোনও ইচ্ছাই হয় না।

গবেষণার সময়ে তাঁদের অবস্থা এমন ছিল যে তাঁরা রীতিমত ‘অকর্মা’ হয়ে পড়েছিলেন। কোনও কিছু না করেই এঁরা ঘন্টার পর ঘন্টা কাটিয়ে দিতেন। কোনও কাজেই তাঁদের কোনওরকমের উ‌ৎসাহ ছিল না। এর কারন খুঁজে বের করতে গিয়ে গবেষকরা দেখলেন, এঁদের প্রায় সবারই “striatum” কোনও না কোনও কারনে কাজ করছে না।

কেউ কেউ মানসিক আঘাতের কারনে মটিভেট হওয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছিলেন, আবার কেউ কেউ শারীরিক কারনেও এই অবস্থার শিকার হয়েছিলেন।

গবেষনায় অংশগ্রহণকারী এক দম্পতি ছিলেন। স্বামীটির এই অবস্থা হয়েছিল। তিনি সব ব্যাপারে মোটিভেশন হারিয়ে ফেলেছিলেন। স্বামীর মধ্যে উ‌ৎসাহের বোধ ফিরিয়ে আনার জন্য স্ত্রী করলেন কি প্রতিদিন এমন কিছু বিষয় স্বামীর সামনে নিয়ে আসতে লাগলেন যাতে করে তাঁকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয়।

বাজারে যাওয়ার আগে তিন-চারটি সব্জীর নাম করে একটি বেছে নিতে বললেন, আজ নীল না হলুদ জামা পরে বের হবেন – সেই সিদ্ধান্তও স্বামীর ওপর ছেড়ে দিলেন। এমন করে ছোট খাট বিষয় থেকে শুরু করে কিছু বড় বড় বিষয়েও একাধিক অপশনের কথা বলে স্বামীকে একটি বেছে নিতে বললেন। এমন করে চলতে চলতে একটা সময়ে দেখা গেল লোকটির ভেতরে মোটিভেশন বা উ‌ৎসাহ একটু একটু করে বেড়ে চলেছে।

এই উদাহরণগুলোর ফলে আমরা একটি সিদ্ধান্তে আসতে পারি যে, যদি আপনি আপনার নিজের কাজ অন্যদের দিয়ে ভালমত করাতে চান অথবা আপনি নিজের কাজই পুরো উ‌ৎসাহের সাথে করতে চান তবে সেখানে সিদ্ধান্ত নেয়ার স্বাধীনতা সৃষ্টি করুন।

একটি কাজ করার দুই-তিনটি পদ্ধতি বের করুন এবং তার মধ্য থেকে অন্যদেরও যেমন বেছে নেয়ার স্বাধীনতা দেবেন, তেমনি নিজেও নিজের কাজের একাধিক পদ্ধতির মাঝে একটি বেছে নেবেন। হতে পারে এক ঘন্টার একটি কাজে দশ মিনিটের বিরতির সুযোগ রয়েছে। বিরতিটি আপনি চাইলে বিশ মিনিট পরও নিতে পারেন, আবার ত্রিশ-চল্লিশ মিনিট পরেও নিতে পারেন। অন্যকে কাজ বুঝিয়ে দেয়ার সময়েও এই স্বাধীনতাটুকু দিন। এতেকরে কাজের মাঝে উ‌ৎসাহ বেড়ে যাবে।

এই পদ্ধতিটি আপনি আপনার ব্যক্তিগত জীবনেও কাজে লাগাতে পারবেন। মনে করুন আপনার সন্তান ঠিকমত পড়াশুনা করছে না। তাকে সকালেই পড়তে বসতে হবে, অথবা সন্ধ্যা হওয়ার সাথেই পড়তে বসতে হবে – এমন কোনও বাধ্যবাধকতার মাঝে না ফেলে – তাকে বলুন পড়ার জন্য সকাল ও সন্ধ্যা হল সেরা সময়, সে কোন সময়ে পড়তে চায়? – তার সামনে যখন দু’টি অপশন দেয়া হবে, সে তখন ভাববে তার সিদ্ধান্তকে গূরুত্ব দেয়া হচ্ছে।

এতেকরে সে দু’টোর মধ্যে থেকে একটিকে বেছে নেবে, এবং তার বেছে নেয়া সময়েই সে নিজের উ‌ৎসাহে পড়তে বসবে। অথবা এমন যদি হয় যে আপনি আপনার সন্তানকে দায়িত্বশীলতা শেখাতে চাচ্ছেন, তাহলে তাকে একটি নির্দিষ্ট কাজের আদেশ না করে তাকে হয়তো বলতে পারেন ঘর গোছানো এবং বাজার করার মাঝে যে কোনও একটি কাজ বেছে নিতে। এতেকরে সে নিজের সিদ্ধান্তেই আপনার উদ্দেশ্যটি পূরণ করে দেবে।

একই ভাবে ধরুন আপনার হাতে যদি ছুটির দিনে বেশি কাজ পড়ে যায় তবে আপনি আপনার কোনও কর্মচারীকে বলতে পারেন যে সে চাইলে আজ অফিসের পরে আপনাকে কাজে সাহায্য করতে পারে, অথবা চাইলে ছুটির দিনে একটু সময় বের করে আপনাকে সাহায্য করতে পারে। – সে ধরে নেবে যে কাজটি কখন করবে সেই সিদ্ধান্ত তার নিজের হাতেই রয়েছে। সে উ‌ৎসাহের সাথেই তার পছন্দমত সময়ে কাজটি করে দেবে।

এই পদ্ধতিতে আপনি যদি কাউকে দিয়ে কাজ করান, তাহলে সেই মানুষটি নিজের কাজ মনে করেই আপনার কাজটি করবে, এর ফলে সেই সময়ে আপনি আপনার কাজটি নিশ্চিন্তে করতে পারবেন।

স্মার্ট মানুষেরা এভাবেই অন্যদের উ‌ৎসাহিত করার মাধ্যমে অন্যদের দিয়ে তাঁদের কাজটি করিয়ে নেন, সেইসাথে নিজেকেও একই ভাবে উ‌ৎসাহ দিয়ে থাকেন।

একজন মানুষ যদি ধরে নেয় যে কোনও একটি কাজের নিয়ন্ত্রণ তার নিজের হাতে রয়েছে, তাহলে মস্থিষ্কের “striatum”  অংশ অনেক বেশি এ্যাকটিভ হয়ে পড়ে – এতেকরে কাজগুলো অনেক দ্রুত হয়, কাজের ফলাফল বা output ও অনেক ভাল হয়।

একটি বিষয় এখানে জেনে রাখা ভাল যে আমাদের মস্তিষ্ক কল্পনা ও বাস্তব – দুই পরিস্থিতিতেই একই প্রতিক্রিয়া দেখায়। আপনি বিরিয়ানীর ঘ্রাণ বাস্তবে পেলে আপনার মস্তিষ্ক যে প্রতিক্রিয়া দেখাবে, সেই ঘ্রাণের কথা মনে হলেও একই প্রতিক্রিয়া দেখাবে। চোখ বন্ধ করে আপনার প্রিয় খাবারের চেহারা কল্পনা করে দেখুন – একটু পরেই দেখবেন জিভে পানি এসে গেছে।

এভাবে কোনও কাজের সময়ে যদি নিজেকে ভুলিয়ে রাখতে পারেন যে আপনার যে কোনও সময়ে বিশ্রাম নেয়ার অথবা অন্য কিছু করার স্বাধীনতা আছে – আপনি দেখবেন কাজের ক্লান্তিও অনেকটা কমে গেছে।

টিম

আপনি নিশ্চই খেয়াল করেছেন যে, একজন মানুষ তার বাবা-মায়ের সামনে যেমন আচরন করে, বন্ধুদের সাথে থাকলে তেমন আচরণ করে না।

বড়দের বা ছোটদের সামনে থাকলে আমরা যেমন আচরন করি, সমবয়সী বন্ধুদের সাথে থাকলে তেমনটা করি না। বন্ধুদের সাথে যে কথা আপনি অকপটে শেয়ার করেন, অন্যদের সামনে তা করা যায় না।

বন্ধুদের সাথে থাকলে আমরা অনেকটাই ‘ইজি’ আচরন করি। সেখানে কোনও মানসিক বাধা থাকে না। এর কারণ, আমরা বন্ধুদের সাথে থাকার সময়ে মানসিক ভাবে মুক্ত অনুভব করি। এই মানসিক ভাবে মুক্ত থাকতে পারার জন্যেই কাছের বন্ধুর কাছে কোনও কিছু না লুকিয়ে নিজের আসল মনোভাব আমরা তুলে ধরতে পারি ।

team work

এখানে লেখক মানসিক নিরাপত্তা বা “Psychological Safety” এর ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন বন্ধুদের সাথে থাকার সময়ে মানুষ মানসিক ভাবে নিরাপদ বোধ করেন।

কোনও একটা কথা বললে কে কি মনে করবে বা কে কোন কথা কিভাবে নেবে – এইসব দু:শ্চিন্তা মানুষের মনে খুব একটা আসে না। এর কারণ, দুইজন মানুষের মাঝে বন্ধুত্ব তখনই হয়, যখন তাদের চিন্তাভাবনা, বিশ্বাস, দর্শন, জীবনাচরন প্রায় একই রকমের হয়। এছাড়া বন্ধুদের সাথে আমাদের এমন একটা সম্পর্ক হয় যাতে করে সবাই নিজের মনের কথা নিজের মত করে বলতে পারে।

এই কারণেই আমাদের বেশিরভাগ গোপন কথাই কোনও না কোনও বিশ্বস্ত বন্ধু জেনে থাকে। অনেক সময়ে পরিবারের মানুষদেরও সেইসব কথা বলা যায় না।

আপনি হয়তো ভাবছেন, প্রডাক্টিভিটির সাথে এই মানসিক নিরাপত্তার আবার কি সম্পর্ক?

সত্যি বলতে, আপনি যদি খুব বড় কোনও কিছু অর্জন করতে যান, তবে আপনার অবশ্যই বড় একটি টিমের প্রয়োজন হবে। আর এই টিমের মেম্বারদের যদি তাদের সর্বোচ্চ প্রোডাক্টিভিটি দিয়ে কাজ করতে হয়, তবে তাদের মাঝে এই মানসিক নিরাপত্তা থাকা আবশ্যক।

বন্ধুদের সাথে যেমন অকপটে সবকিছু শেয়ার করা যায়, প্রতিটি টিম মেম্বারও যেন এমনই একটি আইডিয়া পায় যে টিমের মধ্যেও তার সেই স্বাধীনতা রয়েছে, যেখানে তারা তাদের আইডিয়াগুলো মুক্তভাবে শেয়ার করতে পারে। এতে করে কাজের প্রতি তাদের ১০০ ভাগ মনযোগ ও নিবেদন থাকে, এবং সেইসাথে তাদের প্রোডাক্টিভিটিও বেড়ে যায় কয়েক গুণ।

এই কারণে, প্রোডাক্টিভ মানুষেরা এই ধরনের একটি টিম গড়ে তোলেন, অথবা নিজেরাও কাজ করলে প্রথমেই দেখেন সেখানে কাজ করার ও মতামত দেয়ার পূর্ণ স্বাধীনতা আছে কি না।

এই ধরনের প্রোডাক্টিভ টিমে সবার মতামত ও আইডিয়াকে গুরুত্ব দেয়া হয়। প্রত্যেক মেম্বার টিমের অন্যদের কাছ থেকে সব সময়ে সমর্থন ও সহায়তা পেয়ে থাকেন।

অনেক সময়ে দেখা যায় যে একজন মেম্বার যদি কোনও অসুবিধার কারণে তাঁর কাজ করতে না পারেন, তাহলে অন্য মেম্বাররা তাঁর কাজটি পুষিয়ে দেয়। এতে করে একজন মেম্বার সবসময়েই টিমের মাঝে একটি নিরাপত্তা খুঁজে পায়।

লেখক বলেন, আপনি যদি এমন একটি টিমের মেম্বার হন, অথবা আপনার অধীনে যদি এমন একটি টিম থাকে, তাহলে অন্য টিমের চেয়ে আপনার টিমের কাজের গতি ও প্রোডাক্টিভিটি কয়েক গুন বেশি থাকবে।

বিশ্বের এক নম্বর সার্চ ইঞ্জিন ও টেক কোম্পানী গুগল (Google) তাদের পারফেক্ট টিম গড়ার জন্য পরিচালিত গবেষণা প্রজেক্ট “Project Aristotle” চালাতে গিয়েও এই মানসিক নিরাপত্তার বিষয়টি খুঁজে পেয়েছে। তাদের প্রতিটি টিমেই এই ব্যাপারটির চর্চা করা হয়। তাদের গবেষণায় একটি Perfect team এর যে মূল পাঁচটি Key factor উঠে এসেছে, তার মধ্যে মানসিক নিরাপত্তা বা Psychological Safety প্রধান ফ্যাক্টর হিসেবে বিবেচিত।

অতএব আপনি যখন একটি টিমের সাথে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেবেন অথবা নিজে একটি টিম গড়বেন, লেখকের মতে আপনার প্রধান ফোকাস পয়েন্ট থাকতে হবে এই মানসিক নিরাপত্তার ব্যাপারটি।

ফোকাস ও মেন্টাল মডেলিং

২০০০ সালের ১লা জুন এয়ার ফ্রান্স এর “ফ্লাইট ৪৪৭” ব্রাজিল থেকে প্যারিসের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছিল। যাত্রা শুরুর কয়েক মিনিটের মাথায়ই বিমানটি একটি ঝড়ের কবলে পড়ে গেল ঝড়ের আঘাতে হঠা‌ৎ করেই প্লেনটির অটোপাইলট কাজ করা বন্ধ করে দিল এবং সেটি এক দিকে কা‌ৎ হয়ে উড়তে লাগল।

প্রবল ঝড়ের প্রভাবে প্লেনটি উল্টোপাল্টা ভাবে ওড়ার কারনে তার স্পিড মিটার ঠিকভাবে কাজ করছিলনা, এবং দ্বিধাগ্রস্থ পাইলটরা সিদ্ধান্ত নিতে পারছিল না যে তারা প্লেনটির গতি বাড়াবে না কমাবে। এই ধরনের পরিস্থিতিতে পাইলটদের উচি‌ৎ ছিল প্লেনের মাথাটি নিচের দিকে চালিত করে স্পিড বাড়িয়ে দেয়া। পাইলটরা সেই বিষয়ে ট্রেনিং পাওয়া সত্ত্বেও পরিস্থিতির চাপে ভীত ও দ্বিধাগ্রস্থ হয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় পড়ে গিয়েছিল। এবং সেই কারনে প্লেনটির নিয়ন্ত্রণও তারা ঠিকমত করতে পারছিল না।

প্লেনটিকে তারা ওপরে ওঠানোর চেষ্টা করে যাচ্ছিল যার ফলে তার গতি কমে আসছিল। গতি কমতে কমতে প্লেনটি এক পর্যায়ে থেমে গিয়ে আটলান্টিক মহাসাগরে পতিত হয়েছিল। সেই দুর্ঘটনায় পাইলটসহ সব যাত্রীরই করুণ মৃত্যু হয়েছিল।

এবার আর একটি দুর্ঘটনার কথা বলা যাক, যাত্রী বোঝাই ক্যানটাস এয়ারওয়েজ এর ফ্লাইট৩২ সিঙ্গাপুর থেকে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে যাচ্ছিল। যাত্রা শুরুর কয়েক মিনিটের মধ্যে প্লেনটির ইঞ্জিনে আগুন ধরে যায়। যার ফলে ইঞ্জিনটি বিস্ফোরিত হয়।

এই ঘটনা ঘটার সাথে সাথেই পাইলট অটোপাইলট বন্ধ করে প্লেনটির নিয়ন্ত্রণ নিজে নিয়ে নেয়। পাইলট প্লেনের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার সাথে সাথেই ককপিটের স্ক্রিণে এরর সিগন্যাল দেখা গেল এবং প্লেনের মাঝে ডেঞ্জার এলার্ম বেজে উঠল। যাত্রীরা ভয়ে আধমরা হয়ে এমন চেঁচামেচি শুরু করে দিল যে তাদের কোনওভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছিল না। সেইসাথে প্লেনের নিয়ন্ত্রণও একটু পর পরই হারিয়ে যাচ্ছিল।

এতসব ঝামেলার মাঝেও পাইলট মাথা ঠান্ডা রেখে তাঁর কাজ করার চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন। তিনি নিজের সাহস ধরে রেখে প্লেনটিকে ঘুরিয়ে নিয়ে ল্যান্ড করতে সমর্থ হলেন; আর সেই সাথে বেঁচে গেল বেশকিছু মানুষের জীবন।

এইযে দু’টি ঘটনা বলা হল, দুটিতেই প্লেন দুর্ঘটনার মুখে পড়েছিল, এর মাঝে প্রথম দুর্ঘটনার চেয়ে দ্বিতীয়টি বেশি বিপজ্জনক ছিল। প্রথম প্লেনটির পাইলট সাহস না হারালে দ্বিতীয় প্লেনের পাইলটের থেকে সহজে তাঁর প্লেনটি বাঁচাতে পারতেন। কিন্তু তিনি বিপদে মাথা ঠান্ডা রাখতে না পারার কারনেই নিজেদের সাথে বহু যাত্রীকে চরম বিপদে ফেলেছিলেন।

ফ্লাইট ৪৪৭, অর্থা‌ৎ প্রথম বিমানটির পাইলটের যা হয়েছিল তাকে ইংরেজীতে বলে “cognitive tunneling” – এই অবস্থা তখন হয়, যখন একজন মানুষ রিল্যাক্সড অবস্থা থেকে হঠা‌ৎ করেই কোনও একটি বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে পড়ে যায়।

বিপদটা যখন একটি চমকের মত করে সামনে আসে, তখন অনেক মানুষের মাথাই ঠিকমত কাজ করে না। কোনওভাবেই তাঁরা কোনও সিদ্ধান্তে আসতে পারেন না। আর এই সিদ্ধান্তহীনতার ফলেই ঘটে যায় চরম কোনও দুর্ঘটনা।

অন্যদিকে ক্যানটাস, অর্থা‌ৎ দ্বিতীয় বিমান এর পাইলট তুলনামূলক বেশি বিপজ্জনক অবস্থায় থাকার পরও মাথা ঠান্ডা রাখতে পেরেছিলেন, কারণ তিনি একটি বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বন করেছিলেন। এই পদ্ধতিকে ইংরেজীতে বলে “Mental Modeling” – অর্থা‌ৎ মনস্তত্বকে সাজিয়ে নেয়া। এটি একধরনের সাজানো কল্পনা বলা যায়। এই পদ্ধতিতে একজন মানুষ কোনও কাজ শুরুর আগে নিজের মনে কল্পনা করে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একটি ছক সাজিয়ে নেন। এই ছকের মাঝে কোনও অপ্রত্যাশিত বিপদ আসলে কি করবেন – সেই ব্যাপারটিও ভেবে নেয়া থাকে।

এতেকরে কাজের প্রতিটি পদক্ষেপের ব্যাপারে যিনি কাজ করছেন, তাঁর একটি মানসিক প্রস্তুতি থাকে। যদি সত্যিকারেই কোনও অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে যায়, তখন আর সেটি পুরোপুরি চমক থাকে না – কারণ, কোনও একটি বাধা বা অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটতে পারে, তা আগে থেকেই জানা থাকে।

যাঁরা সর্বোচ্চ প্রোডাক্টিভিটির সাথে কাজ করেন, তাঁরা কোনও একটি কাজ শুরুর আগে সেই কাজের প্রতিটি ধাপের একটি করে মনস্তাত্বিক ছবি (Mental image) সৃষ্টি করে নেন।

এতেকরে কাজের চাপ অনেকটা কম অনুভূত হয়। দিনের শুরুতে যদি আপনি আপনার সারাদিনের কাজের ছকটি কিছুক্ষণ সময় নিয়ে এভাবে কল্পনা করেন তাহলে সারাদিন সেটি একটি ম্যাপ এর মত কাজ করবে।

শুধু সেই ম্যাপ ধরে ধরে এগুলেই চলবে। এর মাঝে যদি কোনও বাধা আসে, তবে সেই অবস্থায় মাথা ঠান্ডা রেখে সমস্যা সমাধানের বিষয়টিও মাথায় গেঁথে নিতে হবে। এতেকরে সারাদিনে সব পরিস্থিতিতেই আপনি ঠান্ডা মাথায় গুছিয়ে কাজ করতে পারবেন।

দ্বিতীয় প্লেনটির পাইলট প্রতিবার ফ্লাই করার আগে এই কাজটি করে নিতেন। প্রতিবারই তিনি তাঁর ফ্লাই এর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একটি মেন্টাল মডেলিং করে তারপর প্লেনে উঠতেন। এর মাঝে যদি কোনও অপ্রত্যাশিত বিপদ আসে, তবে তিনি সেগুলোকে কিভাবে সামলাবেন – সেই ব্যাপারটিও তিনি আগে থেকেই ভেবে রাখতেন। আর এই মেন্টাল মডেলিং এর কারনেই তিনি চরম বিপদে পড়েও মাথা ঠান্ডা রাখতে পেরেছিলেন।

তবে কোনও প্রকারের বিপদ না হলেও কাজের ক্ষেত্রে আপনার মাথায় যদি একটি মেন্টাল মডেল সৃষ্টি করা থাকে, তবে কাজটি সাধারন অবস্থার চেয়ে অনেক বেশি গোছানো হবে।

পরিশিষ্ট:

মোটামুটি এই হল চার্লস ডুহিগ এর Smarter Faster Better বইয়ের মূল কয়েকটি ফোকাস পয়েন্ট। বইটির কৌশলগুলি খুবই যত্ন সহকারে গভীর পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে গবেষণা করে বের করা হয়েছে। আশা করা যায় এই পদ্ধতিগুলো কাজে লাগিয়ে আপনার কাজগুলোও হয়ে উঠবে Smarter, Faster, Better. – আপনার যদি মনে হয় লেখাটি আপনার ও অন্যের কাজে আসতে পারে, তবে শেয়ার করে অন্যকেও দেখার সুযোগ করে দিন। লেখাটি কেমন লাগলো তা আমাদের কমেন্ট করে জানান। সেইসাথে আমাদের জন্য আপনার কোনও পরামর্শ থাকলেও কমেন্টে লিখুন।  জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে আপনার সাফল্য কামনা করছি। আপনার সাফল্য যাত্রায় লড়াকু সব সময়ে আপনার পাশে আছে। আপনার সাফল্যই আমাদের স্বার্থকতা।

পোস্টটি শেয়ার করুন !