এক নজরে লেখাটির বিষয়ে:
ইদানিংকার প্রতিযোগীতামূলক ব্যবসায়িক পরিবেশে নতুন নতুন আইডিয়া সৃষ্টি ও সেগুলোকে কাজে লাগানোর কোনও বিকল্প নেই। এবং এর জন্য প্রয়োজন দারুন একটি টিমের যারা সমঝোতা ও সহযোগীতার মধ্যদিয়ে দারুন টিম ওয়ার্ক দেখাবে। কিন্তু মাত্র অল্পকিছু প্রতিষ্ঠান ছাড়া এটা কেউ করতে পারছে না। গুগল এই সমস্যার সমাধানে একটি বড়সড় রিসার্চ করেছিল “প্রজেক্ট এরিস্টটল” নামে। এবং এর মাধ্যমে তারা ৫টি দারুন সূত্র আবিষ্কার করে- যেগুলো আজ আপনিও জানবেন।
হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউতে প্রকাশিত একটি গবেষণার রিপোর্ট অনুযায়ী: “গত বিশ বছরে কোম্পানীগুলোতে ম্যানেজার ও কর্মীদের একত্রে কাজ করার মাত্রা ৫০% বেড়েছে। অনেক কোম্পানীতে একজন কর্মীর দিনের ৭৫% এর ও বেশি কাটে অন্য কর্মীদের সাথে মিলিত ভাবে কাজ করে। “
এটি অবশ্যই একটি ভাল দিক। কিন্তু মুদ্রার উল্টো পিঠও কিন্তু আছে। সেই একই গবেষণার তথ্য: “বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ২০ থেকে ৩৫% সত্যিকার টিম ওয়ার্ক দেখা যায় মাত্র ৩ থেকে ৫% কর্মীর মাঝে।”
কাজেই যদিও বর্তমান সময়ে ওপেন অফিস প্ল্যান জনপ্রিয় হয়ে উঠছে, এবং সৃষ্টিশীল চিন্তা ও কাজের জন্য জায়গা সৃষ্টি হচ্ছে, সর্বোচ্চ ফলাফল বের করে আনার জন্য সত্যিকার সম্মিলিত কাজ অথবা টিমওয়ার্ক পেতে হলে বেশকিছু জায়গায় উন্নতি করার প্রয়োজন আছে।
গুগলের “Project Aristotle”
প্রতিটি প্রতিষ্ঠানেই একটি বা একাধিক টিম থাকে। তারা বিভিন্ন প্রজেক্টে মিলেমিশে কাজও করে। কিন্তু সত্যিকার টিম ওয়ার্ক বলতে যা বোঝায়, তা যেন কোম্পানীগুলোর কাছে সোনার হরিণ।
ছোটছোট কোম্পানী বাদ দিয়ে অনেক বড় বড় কোম্পানীতেও “perfect team work” এর দেখা পাওয়া যায় না।
আপনি কি কখনও ভেবে দেখেছেন কি কারনে একটি টিম সফল হয়? আর কি কারনে মাত্র কিছু টিম বাদে অন্য টিম গুলো সফল হয়ে উঠতে পারে না?
বিশ্বের সবচেয়ে বড় টেক কোম্পানীগুলোর অন্যতম গুগল – এর হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট এই প্রশ্নের উত্তর অনেক দিন ধরেই খুঁজে আসছিল।
অন্য অনেক এইচ-আর ডিপার্টমেন্টের মত গুগলের এই ডিপার্টমেন্টটিও ‘সেরা ট্যালেন্ট’ নিয়োগ দেয়ার ব্যাপারে মনযোগী ছিল। তারা বেশিরভাগ সময়ই ব্যায় করতো ব্যক্তিকেন্দ্রিক নিয়োগ, তাদের পর্যবেক্ষণ করা ও উন্নতি সাধনে। কিন্তু গুগলের বেশিরভাগ কাজই উদ্ধার হয় ‘টিম’ এর মাধ্যমে!
অবশেষে ২০১২ সালে গুগলের হিউম্যান রিসোর্স ডিপার্টমেন্টের একদল গবেষক “প্রজেক্ট এরিস্টটল” (Project Aristotle) শুরু করে। এর উদ্দেশ্য ছিল “গুগলের টিমগুলো কিভাবে কার্যকর হয়ে উঠবে?” – এই প্রশ্নের মোক্ষম উত্তর খোঁজা।
এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে তারা পরবর্তী দুই বছর প্রজেক্টের অধীনে ১০০ এর বেশি টিমের মাঝে ২০০ এর বেশি ইন্টারভিউ নেয়। কার্যকরী টিম বানানোর মোক্ষম সূত্র খুঁজে বের করাই ছিল এর উদ্দেশ্য।
এই প্রজেক্টের গবেষকরা বিভিন্ন একাডেমিক গবেষণা পর্যালোচনা করে কিছু প্যাটার্ণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন, যেগুলো নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পেতে সাহায্য করবে:
# একটি টিমে যারা আছে, তাদের ব্যক্তিত্ব, শিক্ষা ও ব্যাকগ্রাউন্ড (ভাল টিমওয়ার্কের জন্য) কতটা জরুরী?
# আত্মমুখী মানুষদের একটি টিমে এক করে দেয়াটা কি ভাল হবে?
# টিমের সদস্যরা যদি টিমের বাইরে ব্যক্তিগত জীবনেও বন্ধু হয়, সেটা কি টিমওয়ার্কের জন্য বেশি ভাল?
# সেরা টিমগুলোতে কি এক ধরনের বিষয়ের প্রতি আগ্রহী মানুষ বেশি থাকে?
এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজতে গবেষণা ও তথ্য পর্যালোচনা করতে গিয়ে তাঁরা বেশ কয়েকটি বিষয় খুঁজে পান যা একটি পারফেক্ট টিম সৃষ্টিতে সহায়তা করবে। এর মাঝে আমাদের মূল আলোচনার বিষয়, সেরা টিম বানানোর পাঁচটি সূত্র অবশ্যই আছে, কিন্তু এর বাইরেও একটি বিষয় বের হয়ে এসেছে। এই বিষয়টি নিয়েই প্রথমে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা যাক:
ব্যক্তির থেকে কর্মপদ্ধতি বেশি গুরুত্বপূর্ণ (How is more important than Who):
গবেষকরা প্রজেক্টটি চালাতে গিয়ে প্রথম যে বড় তথ্যটি আবিষ্কার করেন, তা হলো, কাদের নিয়ে একটি টিম গঠিত তা টিমের পারফর্মেন্সে তেমন একটা প্রভাব ফেলে না। গবেষকরা দেখলেন কিভাবে টিমের সদস্যরা কাজ করছেন, সেটাই টিমের পারফর্মেন্স নির্ধারণ করছে।
এ প্রসঙ্গে গুগলের People Analytics division এর একজন ম্যানেজার অ্যাবির ডুবি বলেন: “পুরো কোম্পানীর মধ্য থেকে আমরা ১৮০টি টিমের ওপর গবেষণা চালিয়েছি। এটা করতে গিয়ে আমাদের হাতে প্রচুর তথ্য এসেছে, কিন্তু আমরা কোথাও পাইনি যে বিশেষ কিছু ব্যক্তিত্ব বা দক্ষতা বা শিক্ষা সম্পন্ন লোককে এক করলেই একটি টিম ভালো করবে। (ভাল টিম এর ক্ষেত্রে) ব্যক্তির ব্যাপারটি আসলে তেমন কোনও অবদান রাখে না”।
তাহলে দেখা যাচ্ছে, একটি টিমে কি ধরনের মানুষ রয়েছে তার থেকে একটি টিমের ডায়নামিক, অর্থাৎ টিমটি কি পদ্ধতিতে টিম ওয়ার্ক করছে সেটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
গুগলের গবেষকরা বের করেছেন যে একটি টিমের আদর্শই আসলে টিমের সেরা কাজটি বের করে আনে। এই আদর্শগুলো আসলে টিমের অলিখিত আইন যা টিমের সদস্যরা একে অন্যের সাথে কিভাবে কাজ করবে – তা নির্ধারন করে। এই আদর্শগুলোই একটি টিমের সফলতার গোপন সূত্র।
কার্যকর টিম গড়ার পাঁচটি আদর্শ সূত্র
বেস্ট সেলিং লেখক চার্লস ডুহিগ নিউ ইয়র্ক টাইমস্ এ প্রকাশিত তাঁর “What Google Learned From Its Quest to Build the Perfect Team” আর্টিকেলে লিখেছেন: “গবেষকদের তথ্য অনুযায়ী, যে ব্যাপারটি কম কার্যকর টিম থেকে একটি সত্যিকার কার্যকর টিমকে আলাদা করে, তা হল টিমের সদস্যরা একে অন্যের সাথে কেমন আচরণ করে, সেই বিষয়টি। সঠিক আদর্শগুলোর চর্চা হলে একটি টিমের সার্বিক দক্ষতা ও বুদ্ধিমত্তার বিকাশ হয়। অন্যদিকে ভুল আদর্শের চর্চা হলে প্রতিটি টিম মেম্বার ব্যক্তিগত ভাবে সব ক্ষেত্রে সেরা হলেও টিমের সার্বিক সাফল্য তেমন একটা আসে না”।
আগেই বলা হয়েছে এই সঠিক আদর্শগুলো আসলে কোনগুলো – তা বের করার জন্যই প্রজেক্ট এ্যারিস্টটল এর গবেষকরা একটি পর্যায়ে তাদের সব মনযোগ নিয়োগ করেন। এবং এর ফলে বেরিয়ে আসে মোট পাঁচটি আদর্শ, যেগুলো আসলে যে কোনও টিমকে একটি কার্যকর টিমে পরিনত করার সূত্র। চলুন একে একে সেগুলো সম্পর্কে সংক্ষেপে জেনে নেয়া যাক:
০১. মানসিক নিরাপত্তা:
মানসিক নিরাপত্তা বা “psychological safety” কথাটি প্রথম সামনে আনেন হার্ভার্ড এর অধ্যাপক এমি এডমুনসন। তাঁর মতে মানসিক নিরাপত্তা বোধ হচ্ছে এমন একটি মনোভাব যা একজন টিম মেম্বারের মধ্যে থাকলে সে অনেক বেশি স্বচ্ছন্দে নিজের কাজগুলো করতে পারবে। TEDx এর একটি কনফারেন্সে তিনি বলেছিলেন “এটি হচ্ছে (একজন টিম মেম্বারের মধ্যে থাকা ) একটি বিশ্বাস যে সে নিজের মতামত প্রকাশ করলে, প্রশ্ন করলে, নিজের ভাবনা ব্যক্ত করলে, এমনকি কোনও ভুল করলেও তাকে শাস্তি পেতে হবে না, বা অপমানিত হতে হবে না।”
গুগল এর এই আর এর একজন এ্যানালিস্ট, জুলিয়া রজোভস্কি বলেন “মানসিক নিরাপত্তা হচ্ছে আমাদের খুঁজে পাওয়া পাঁচটি আদর্শ সূত্রের মধ্যে প্রধান সূত্র। এটিকে বলা যায় অন্য চারটির ভিত্তি”।
গবেষণায় দেখা গেছে, গুগলের যেসব সেলস টিমে এই মানসিক নিরাপত্তার বিষয়টি বেশি মাত্রায় রয়েছে সেগুলো গড়ে তাদের বিক্রয়ের নির্ধারিত সীমা (sales target) থেকেও ১৭% বেশি বিক্রয় করতে পেরেছে। আর যেসব টিমে মানসিক নিরাপত্তা কম, সেগুলো তাদের টার্গেটের থেকে গড়ে ১৯% পিছিয়ে আছে।
গুগলের গবেষণায় উঠে এসেছে যে যখন টিমের সদস্যরা ঝুঁকি নেয়ার ক্ষেত্রে নিরাপদ বোধ করবে, অর্থাৎ কোনও কাজে ব্যর্থ হলেই তারা অপমান ও শাস্তির শিকার হবে না – এই নিশ্চয়তা পাবে; সেই সাথে নিজের যে কোনও দুর্বলতা ও অসুবিধার কথা অন্যদের অকপটে বলতে পারবে, সেই টিমগুলো অন্য টিমের থেকে অনেক ভাল কাজ করবে।
মানসিক নিরাপত্তাবোধ টিম মেম্বারদের মাঝে তখনই সৃষ্টি হয় যখন তারা কাজের বিষয়ে যে কোনও ধরনের প্রশ্ন করতে পারে, নিজেদের ভাবনা ও আইডিয়ার কথা বলতে পারে, এমনকি টিমের অন্যদের থেকে ভিন্ন কোনও মতামত দিলেও যখন সেটা কেউ বাঁকা চোখে দেখে না। সোজা কথায় নিজের মত কাজ করার বা নিজের মতামত ও আইডিয়া অন্যদের কাছে বলার স্বাধীনতা বোধ করলে কাজের গতি ও স্পৃহা বেড়ে যায়। একজন টিম মেম্বার কোনও কিছু বুঝতে বা করতে কোনও সমস্যার মুখে পড়লে যদি অকপটে অন্যদের সাহায্য ও পরামর্শ চাইতে পারে, তবে তার কাজে কোনওপ্রকার গোঁজামিল দিতে হয় না। সে নিজে পুরোপুরি না পারলেও অন্যদের সাহায্য নিয়ে সে সবথেকে ভাল কাজটি উপহার দিতে পারে। গুগলের গবেষণা অনুযায়ী কার্যকর টিম সৃষ্টির পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখে এই মানসিক নিরাপত্তার বিষয়টি।
০২. নির্ভরতা:
নির্ভরতা মানে এখানে বোঝানো হচ্ছে যে প্রতিটি টিম মেম্বার তাদের নিজের কাজটি ঠিকমত করবে – এমন একটি নিশ্চয়তা বোধ। টিমের প্রতিটি সদস্য অন্য সদস্যদের ওপর পরিপূর্ণ ভাবে নির্ভর করতে পারবেন যে তারা সঠিক সময়ে সঠিক মানের কাজটি করতে পারবেন।
একটি টিমে একজন যদি আরেকজনের ওপর ভরসা না করতে পারে, তাহলে কারও কাজই ঠিকমত হবে না। প্রতিটি টিম মেম্বারের অন্য সব টিম মেম্বারের দক্ষতা ও আন্তরিকতার ওপর পূর্ণ বিশ্বাস রাখতে হবে। একজন টিম মেম্বার যদি দেখে যে অন্যরা তার ওপর ভরসা করছে, তবে কাজের প্রতি তার আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়, যার ফলে কাজও অনেক ভাল হয়। এভাবে প্রত্যেকে নিজের কাজটি ঠিকমত করতে পারলে পুরো টিমের কাজ এমনিতেই ভাল হবে।
০৩. স্পষ্ট ধারনা:
প্রতিটি টিম মেম্বার যদি তার নিজের দায়িত্ব, পরিকল্পনায় তার অংশ, এবং তার নিজের ও টিমের কাজের উদ্দেশ্য পরিস্কার ভাবে বুঝতে পারে, তবে তার কাজের মানও অনেক ভাল হবে।
০৪. নিজের কাছে কাজের অর্থ:
একটি কার্যকর টিমের প্রতিটি সদস্য স্পষ্ট ভাবে জানে যে তার কাজের উদ্দেশ্যটা কি। প্রতিটি সদস্য অনুভব করে তার টিমের কাজটি তার নিজের কাছেও ব্যক্তিগত ভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ কারনে সে মন প্রাণ লাগিয়ে কাজ করতে উৎসাহী হয়ে ওঠে।
০৫. প্রভাব:
এটি অনেকটা আগের পয়েন্টটির মতই, কিন্তু এর ব্যপ্তি অনেক বড়। আগের পয়েন্টে বলা হয়েছে টিম যে কাজটি করছে তা কার্যকর টিমের একজন টিম মেম্বারের কাছে ব্যক্তিগত ভাবে অনেক বড় একটি অর্থ বহন করে। অন্যদিকে একটি সফল ও কার্যকর টিমের প্রতিটি মেম্বারকে এটাও বিশ্বাস করতে হবে যে সে যা করছে, তা তার প্রতিষ্ঠানের ওপর অনেক বড় প্রভাব ফেলবে, সেইসাথে পৃথিবী ও পৃথিবীর বাসিন্দাদের জন্যও তা প্রয়োজনীয় একটি বিষয়। টিম মেম্বারদের বোঝাতে হবে যে তারা যে কাজই করছে, তা প্রতিষ্ঠানের জন্য কতটা জরুরী। সেইসাথে সম্ভব হলে তাদের মাথায় এই ধারনাও প্রবেশ করাতে হবে যে তাদের কাজ পুরো পৃথিবীকে প্রভাবিত করবে।
আপনি এগুলো কাজে লাগিয়ে যা করতে পারেন
আপনি যদি কোনও টিমের সদস্য হন, বা আপনার অধীনে যদি কোনও টিম কাজ করে, আপনি এখন থেকে খুব ভালভাবে টিমের সদস্য ও টিমের কাজ পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। আপনাকে দেখতে হবে যে গুগলের এই পাঁচটি সূত্রের কোন কোন সূত্র আপনি ইতোমধ্যেই কাজে লাগাচ্ছেন, এবং কোন কোন সূত্র কাজে লাগাচ্ছেন না। এটা বোঝার জন্য আপনি কয়েকটি প্রশ্ন করতে পারেন :
মানসিক নিরাপত্তা: “আমি বা আমার টিমের সদস্যদের কি নিজের কথা অকপটে বলার বা প্রশ্ন করার স্বাধীনতা আছে? এই নিরাপত্তাবোধ কি সবার মাঝে আছে যে কোনও ভুল করলে তার জন্য শুধুমাত্র তাকে শাস্তি পেতে হবে না?”
নির্ভরতা: “অন্য টিমমেটরা যখন একজন টিম মেম্বারকে বলেন যে তাঁরা একটি কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মাঝে শেষ করবেন, এবং টিম মেম্বারটি যেন এ নিয়ে কোনও দু:শ্চিন্তা না করেন, তখন তিনি কি টিমমেটদের কথায় ১০০% ভরসা করতে পারেন? – বা তাঁর ওপরেও কি একই পরিস্থিতিতে অন্যরা ভরসা করতে পারেন?”
স্পষ্ট ধারনা: “টিমের মিশন ও উদ্দেশ্য এর ব্যাপারে টিমের প্রতিটি সদস্যের কি স্পষ্ট ধারনা আছে?”
নিজের কাছে কাজের অর্থ: “প্রতিটি টিম মেম্বার কি টিমে তার নিজের কাজের গুরুত্ব পূর্ণমাত্রায় অনুভব করতে পারছেন? তাঁর নিজের কাছে কি কাজটি অর্থপূর্ণ?”
প্রভাব: “টিমের কাজটি প্রতিষ্ঠান ও মানুষের ওপর কতটা প্রভাব ফেলতে পারে, এবং এর ফলাফল কতটা ভাল হতে পারে – সেই ব্যাপারে কি প্রতিটি টিম মেম্বারের স্পষ্ট ধারনা আছে?”
এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে বের করে কমতির জায়গাগুলো ঠিক করতে পারলেই আপনার একটি নিখুঁত টিম থাকবে বলে আশা করা যায়। তাই সময় নিয়ে গুরুত্বের সাথে বিশ্লেষণ করুন আপনার টিমের অবস্থা এবং যেখানে যেখানে এই সূত্রগুলো প্রয়োগ করা প্রয়োজন – তা করুন। দরকার হলে টিমের মেম্বার বদলে ফেলুন। একজন মানুষ যতই দক্ষ হোক না কেন, টিমের সাথে তাল মিলিয়ে কাজ না করতে পারলে তার কোনও দাম নেই। আলিবাবা ডট কম এর প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মা যেমন বলেছিলেন, “আমি আমার টিমের জন্য সেরা লোক হায়ার করি না, আমি ‘সঠিক’ লোক হায়ার করি”।
পরিশিষ্ট
টিমের সেরা পারফর্মেন্স এর জন্য সেরা লোকের দরকার নেই, সঠিক লোকের দরকার। সেইসাথে সঠিক জায়গায় সঠিক সূত্রের প্রয়োগও দরকার। আশা করি তথ্যগুলো কাজে লাগিয়ে আপনি আপনার টিমকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিতে পারবেন, অথবা ভবিষ্যতে একটি দারুন টিম গড়তে পারবেন।
লেখাটি ভাল লাগলে কমেন্টে আমাদের জানান। খারাপ লাগলেও জানান – আপনার প্রতিটি মতামতই আমাদের কাছে অমূল্য পাথেয়। আপনার যদি মনে হয় লেখাটি সত্যিই কারও কাজে লাগতে পারে, তবে শেয়ার করে অন্যদেরও দেখার সুযোগ করে দিন। সাফল্যের পথে প্রতিটি পদক্ষেপে লড়াকু আপনার সাথে আছে।