সফল ভাবে প্রতিজ্ঞা বা প্রতিশ্রুতি পূরণের ২টি সূত্র


জীবনের লক্ষ্য পূরণের জন্য আমাদের মাঝে যে অভ্যাসটি সবচেয়ে জরুরী, তা হল, প্রতিজ্ঞা বা ওয়াদা পূরণের অভ্যাস। প্রতিজ্ঞাকে যথেষ্ঠ গুরুত্ব দিতে না পারলে সেই প্রতিজ্ঞা পূরণ করা সম্ভব হয় না। অন্যের কাছে নিজের সম্মান রাখার জন্য প্রতিজ্ঞা বা প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পারা যেমন জরুরী, তেমনি নিজের কাছে নিজের সম্মান ধরে রাখার জন্য এটা প্রয়োজন।

চলুন, নিজের সম্মান ধরে রাখা ও জীবনের লক্ষ্য পূরণের জন্য জরুরী এই গুণটি কিভাবে অর্জন করতে হবে, তার উপায়গুলো দেখে আসি।

“12 Week Year” বইয়ে সফলভাবে প্রতিজ্ঞা পূরণের জন্য ২টি মূল সূত্র রয়েছে :

০১. শক্তিশালী আকাঙ্খা

কোনওকিছু করার জন্য জন্য আমরা তখনই সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করি, যখন তা একটি শক্তিশালী আকাঙ্খায় রূপ নেয়।

ব্যাপারটা একটু বুঝিয়ে বলি: মনে করুন আপনি দুই ঘন্টা আগে দুপুরের ভাত খেয়ে উঠেছেন। এখন আপনার মিষ্টি খেতে ইচ্ছে করছে। আপনি মিষ্টি খাওয়ার লক্ষ্যে বেরিয়ে পড়লেন, কিন্তু বেরিয়ে দেখলেন আশাপাশে সব মিষ্টির দোকান বন্ধ। আপনার একটু মন খারাপ হল – এবং আপনি বাড়ি ফিরে আসলেন। এটা একটি সাধারন লক্ষ্যের উদাহরন।

এবার ধরুন, আপনার সন্তানের জ্বর। ভাত খেতে পারছে না। তাকে জিজ্ঞাসা করলেন সে কি খেতে চায়। সে জানালো মিষ্টি খেতে চায়। আপনি বের হলেন মিষ্টির খোঁজে। বের হয়ে দেখলেন আশপাশের সব মিষ্টির দোকান বন্ধ। আপনার মনে পড়লো সন্তানের মায়াভরা মুখ। এখন কি করবেন? আপনি ইন্টারনেট ঘেঁটে, পরিচিতদের কল করে বের করলেন আর কোথায় মিষ্টি পাওয়া যায়। তারপর ছুটে গেলেন পাশের এলাকায় বা আরও দূরে কোথাও। মিষ্টি নিয়ে তবেই বাড়ি ফিরলেন।তীব্র একটা আকাঙ্খা জড়িয়ে থাকা লক্ষ্যের উদাহরন। এই শক্তিশালী আর তীব্র আকাঙ্খাই আমাদের অসম্ভবকে সম্ভব করার শক্তি যোগায়।

এই আকাঙ্খার বলেই আমরা প্রতিজ্ঞা পূরণ করি। আপনি যখন কোনও প্রতিজ্ঞা করবেন বা কোনও লক্ষ্য ঠিক করবেন, তখন তাকে এমন একটি আকাঙ্খায় পরিনত করতে হবে। মনে রাখবেন, আমরা যা চাই – তাই পাই না; আমরা শুধু সেটাই পাই, যেটা আমাদের ‘পেতেই হবে’।

কোনও প্রতিজ্ঞা করলে ভেবে দেখুন, সেটি পূরণ না করলে নিজের ও অন্যের কাছে আপনার অবস্থান কি হবে। এর দ্বারা কি কি ক্ষতি হতে পারে। এভাবে চিন্তা করলে প্রতিজ্ঞা বা ওয়াদা পূরণের

০২.আবেগ নয়, প্রতিশ্রুতির কারণে কাজ করুন:

আবেগের কাছে নতিস্বীকার করলে আপনি দ্রুত এবং সময়ের কাজ সময়ে শেষ করতে পারবেন না। কাজেই ‘মন চাইছে না’ বা ‘ইচ্ছে করছে না’ – এই অজুহাতে কাজ ফেলে রাখবেন না। একবার প্রতিজ্ঞা করলে সেই কাজ সময়মত শেষ করুন, আবেগ অনুভূতিকে প্রশ্রয় দেবেন না তাহলে এগুলো সব সময়েই জ্বালাতন করবে।

ওয়াদা বা প্রতিজ্ঞা পালন করা আমাদের ব্যক্তিত্বকে শক্তিশালী করে, নিজের ও অন্যের কাছে আপনার সম্মান কতটা হবে- তার অনেকটাই নির্ভর করে প্রতিজ্ঞা রক্ষায় আপনার আন্তরিকতার ওপর। বিষয়টিকে যদি এভাবে দেখতে না পারেন, তবে আপনার ছোট বড় – সব পরিকল্পনা আর লক্ষ্যই অপূর্ণ থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। কাজেই প্রতিজ্ঞার সামনে কোনও বাধাকে বাধা মনে করবেন না। যদি এই উপায় অবলম্বন করেন, দেখবেন সব লক্ষ্যই আপনি পূরণ করতে পারছেন।

পরামর্শটি কেমন লাগলো, তা আমাদের জানান। যদি মনে হয় এই পরামর্শ অন্যদেরও কাজে আসতে পারে, তবে শেয়ার করে তাদের দেখার সুযোগ করে দিন।  এমন আরও টিপসের জন্য আমাদের সাথে থাকুন। সাফল্যের পথচলায় লড়াকু সব সময়ে আপনার সঙ্গে আছে।

রিলেটেড: “12 Week Year” বইয়ের সম্পূর্ণ বুক রিভিউ এবং দ্রুত কাজ করার ৭টি উপায়

পোস্টটি শেয়ার করুন !