আপনি যখন নতুন কিছু শুরু করবেন, তখন আপনাকে কেউ সাহায্য করতে চাইবে না। আর সত্যি কথা বলতে, আপনাকে সাহায্য করতে কেউ বাধ্য নয়।
মানুষ কেন আপনাকে সাহায্য করবে? এমন কি করেছেন আপনি?
আপনার কাছে অনেক ভালো একটা প্ল্যান আছে? – তাতে আমার কি?
আমাদের আশপাশে যতই বন্ধু-পরিজন থাকুক, দিন শেষে আমরা সবাই একা। এবং আমাদের নিজেরটা নিজেকেই গড়ে নিতে হবে।
কেউ আপনাকে সাহায্য করছে না, কারণ আপনি এখনও বাস্তবে কিছু করে দেখাতে পারেননি। মানুষ প্ল্যান দেখতে চায় না, তারা চায় বাস্তবায়ন। ভাগ্য খুব ভালো না হলে, আপনার নতুন বিজনেস আইডিয়াতে কেউ ইনভেস্ট করবে না। ছোট করে হলেও আপনাকে এটার কার্যকারিতা দেখাতে হবে।
আমাদের প্ল্যান বা স্বপ্ন অনেক ভালো ও সম্ভাবনাময় হলেও অন্যরা তা বুঝতে চায় না। এই কারণে যদি আপনি কারও ওপর রাগ করেন, বা তাকে মূর্খ ভাবেন – তবে আপনি তার চেয়েও বড় মূর্খ।
নিজের কোনও প্ল্যান আপনি যেভাবে কল্পনা করতে পারবেন, অন্যরা তা পারবে না। এর কারণ, প্রতিটি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গী আলাদা। আপনার প্ল্যান কতটা ভালো – এটা অন্যরা বুঝতে পারছেনা মানে, আপনার বোঝানোর ক্ষমতা অতটা ভালো নয়। আর মানুষকে কথা দিয়ে কোনও জিনিস বোঝানোটা খুবই কষ্টকর বিষয়। এটার জন্য আলাদা দক্ষতা প্রয়োজন। যাকে বোঝাচ্ছেন, তার কল্পনা শক্তি, কথা বোঝার ক্ষমতা – ইত্যাদিও বিবেচনা করতে হবে। মানুষের দায় পড়েনি কষ্ট করে আপনার প্ল্যান বুঝবে। বোঝানোর দায়িত্ব আপনার।
এতসব ঝামেলায় না গিয়ে, সবচেয়ে ভালো হয় নিজের পরিকল্পনা নিজেই বাস্তবায়ন করা। ছোট করে হলেও যদি একটা ডেমো দাঁড় করাতে পারেন, তখন মানুষ বিষয়টা চোখের সামনে দেখে আইডিয়াটা সহজেই বুঝতে পারবে। তাকে আর কল্পনা শক্তি বা বুদ্ধি খাটাতে হবে না।
যদি কেউ আপনাকে সাহায্য করতে না চায়, তবে একটু সময় নিয়ে আস্তে আস্তে একটি ডেমো প্রজেক্ট বানান।
কোনও ব্যাপারে ভালো দক্ষতা অর্জন করলে, আর কিছু সাফল্য পেলে তখন অন্যরা নিজে এসেই সাহায্য করতে চাইবে। সব সময়ে মনে রাখবেন, নিজের স্বার্থ ছাড়া অন্যের উপকার করার মত মহামানবের সংখ্যা পৃথিবীতে খুবই কম।
যৌবনে বেশিরভাগ মানুষই ভাবে তাঁরা অনেক বড় সাফল্য অর্জন করবে। কিন্তু ১০০ জনে মাত্র ১জন তেমন সফল হতে পারে। এর একটা বড় কারণ বেশিরভাগ মানুষই সাফল্যের জন্য অন্যের সাহায্য আশা করে।
সফল মানুষেরা একদম শুরু থেকেই বুঝতে পারেন যে নিজের কিছু না থাকলে অন্যের সাহায্য পাওয়া যায় না। যে কোনও বিষয়ে যদি কেউ অসাধারণ দক্ষতা অর্জন করে, তবে তার সেই দক্ষতা কাজে লাগানোর জন্য অন্যরা আসবেই। আর সেই সিঁড়ি ধরেই ধাপে ধাপে একজন মানুষ চূড়ান্ত সাফল্য পেতে পারে।
সাধারণ মানুষ সারাটা জীবন অন্যের অপেক্ষায় থেকে ধীরে ধীরে তাঁদের কাজ করার আদর্শ সময়টা পার করে ফেলে। অন্যের সাহায্যের অপেক্ষায় থাকতে থাকতে তাঁরা নিজেরা কোনও কিছুতেই অসাধারণ দক্ষ হয়ে উঠতে পারে না, আর তাই কেউ তাঁদের কাছে আসে না।
পৃথিবীর নিয়ম হচ্ছে দেয়া-নেয়ার নিয়ম। আপনার যদি দেয়ার কিছু না থাকে তবে আপনাকেও কেউ কিছু দেবে না। সাধারণ মানুষ এই সত্যিটা মেনে নিতে না পারলেও,সফল মানুষেরা এই ব্যাপারটি মাথায় রেখেই নিজেদের গড়ে তোলেন।
আপনার সমস্যা আপনাকেই সমাধান করতে হবে। কেউ নিজে থেকে এসে আপনাকে উদ্ধার করবে না। কাজেই নিজেকে এমন ভাবে গড়ে তুলুন, যেন আপনি নিজেই বড় সমস্যা সমাধান করতে পারেন। তখন দেখবেন, সেই সমস্যা সমাধানের জন্য মানুষ আপনার কাছে আসছে।
এখানে একটা কথা মনে রাখবেন, প্রথমে আপনাকে নিরাশ করার পর, আপনার প্রাথমিক সাফল্য দেখে যদি কেউ ফিরে এসে আপনার সাথে কাজ করতে চায় – আবেগ বা রাগের বশে তাকে ফিরিয়ে দেবেন না।
প্রথমে হয়তো সে আপনার আইডিয়া বুঝতে পারেনি, কিন্তু এখন যখন ফিরে এসেছে – তার মানে আইডিয়াটি সে বুঝতে পেরেছে, এবং সে আন্তরিক ভাবেই আপনার সাথে কাজ করতে চায়।
আর তার ফিরে আসা প্রমাণ করে যে, আপনার আইডিয়াটি আসলেই ভালো ছিল। আপনি শুধু আগেরবার বোঝাতে পারেননি। এখন বাস্তবায়ন দেখে মানুষ আপনার সাথে কাজ করতে আগ্রহী হচ্ছে। আর একবার যখন এটা শুরু হবে, তারপর আর আপনাকে পেছন ফিরে তাকাতে হবে না।
নিজের দক্ষতা বাড়ান। সেই দক্ষতাকে প্রমাণ করুন, সাফল্য আপনার পেছনে ছুটবে।
এই লেখাটি ভালো লাগলে “ধনী ও সফল হতে চাইলে এই ১৫টি অভ্যাস অবশ্যই ত্যাগ করুন“ – লেখাটি পড়তে পারেন। সেখানে এই ধরনের আরও কিছু বিষয় আলোচনা করা হয়েছে।
আর যদি মনে হয় এই লেখাটি পড়ে অন্যরা উপকৃত হবে, তবে শেয়ার করে সবাইকে দেখার সুযোগ দিন।
সাফল্যের পথে, প্রতি পদক্ষেপে লড়াকু আপনার সাথে আছে।