জেফ বেজোস এর জীবনী: কিভাবে তিনি পৃথিবীর সেরা ধনী হলেন


জেফ বেজোসের জীবনী থেকে শেখার মত অনেক কিছুই আছে । ঝুঁকি নিয়ে সফল হওয়ার এক অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন তিনি। বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ধনী জেফ বেজোস একজন আমেরিকান উদ্যোক্তা। তিনি বিশ্বের সেরা অনলাইন শপ আমাজন.কম এর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও, এবং ওয়াশিংটন পোস্ট এর বর্তমান মালিক। তাঁর ব্যবসায়িক সফলতার কারনে তিনি পৃথিবীর সর্বকালের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের একজন। আমরা আজ তাঁর জীবনীর বিশেষ অংশগুলো জানবো।

জেফ বেজোসের মোট ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমান প্রায় ১১,৮০০ কোটি ডলারের বেশি- যা পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বোচ্চ পরিমান ব্যক্তিগত সম্পদের রেকর্ড গুলোর একটি! চলুন জেনে নেয়া যাক কিভাবে তিনি আজকের অবস্থানে পৌঁছলেন।

এক নজরে জেফ বেজোস এর জীবনী:

ই কমার্সের পথিকৃৎ এবং amazon.com এর প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসের জন্ম ১৯৬৪ সালের ১২ই জানুয়ারী, যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকোতে। ছোটবেলা থেকেই কম্পিউটারের প্রতি দারুন আগ্রহ ছিলো। তিনি পড়াশুনাও করেছিলেন ইউনিভার্সিটি অব প্রিন্সটন এ কম্পিউটার সাইন্স ও ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে।

গ্রাজুয়েশনের পর তিনি ওয়াল স্ট্রিটে কাজ করতে শুরু করেন এবং ১৯৯০ সালে ইনভেস্টমেন্ট ফার্ম “D. E. Shaw” – এর ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট হন। কিন্তু ৪বছর পরই তিনি এই লোভনীয় চাকরিটি ছেড়ে দিয়ে amazon প্রতিষ্ঠার কাজে হাত দেন।

আমাজন প্রথমে শুধু একটি ভার্চুয়াল বুক শপ হিসেবে যাত্রা শুরু করে ধীরে ধীরে ইন্টারনেট জগতের সবচেয়ে বড় একটি সাফল্যের গল্প হয়ে ওঠে। ২০১৩ সালে বেজোস ২৫ কোটি মার্কিন ডলারে পৃথিবীর অন্যতম সেরা একটি পত্রিকা, ওয়াশিংটন পোস্ট কিনে নেন

শুরুর কথা:

জেফের মায়ের নাম ছিল জ্যাকলিন গিস জরগেনসিন, এবং তাঁর জন্মদাতা পিতার নাম টেড জরগেনসিন। জেফের জন্মের সময়ে তাঁর মায়ের বয়স ১৮ও পেরোয়নি। তাঁর বাবা মা এক বছরেরও কম সময় বিবাহিত ছিলেন। জেফের বয়স যখন চার বছর, তখন তাঁর মা একজন কিউবান অভিবাসী মাইক বেজোসকে বিয়ে করেন। মায়ের নতুন উপাধিই জেফ বিজোস এর উপাধি হয়ে যায়।

jeff bezos parents
[মাইক ও জ্যাকলিন বেজোস]

ছোটবেলা থেকেই জেফের মধ্যে বিভিন্ন জিনিস কিভাবে কাজ করে – তা জানার দারুন আগ্রহ ছিলো। একদম ছোট বয়সেই তিনি তাঁদের গ্যারেজটিকে প্রায় একটি ল্যাবরেটরি বানিয়ে ফেলেছিলেন। ঘরের চারপাশে ছিলো ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতির আখড়া। কৈশোরে পা দেয়ার কিছুদিনের মধ্যেই তাঁর পরিবার মায়ামিতে বসবাস শুরু করে।

সেখানকার হাইস্কুলের ফলাফলের রেকর্ড ভেঙে পাশ করে বের হন জেফ বিজোস। তাঁর প্রথম ব্যবসার শুরুও এই হাইস্কুল থেকেই। ড্রিম ইন্সটিটিউট নামে চতুর্থ, পঞ্চম, ও ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য তিনি একটি শিক্ষামূলক ক্যাম্প শুরু করেছিলেন তিনি।

হাইস্কুল থেকে বের হওয়ার পর তিনি আমেরিকার বিখ্যাত প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটিতে তাঁর ভাললাগার বিষয় কম্পিউটার নিয়ে পড়াশুনা শুরু করেন ।

১৯৮৬ সালে থেকে কম্পিউটার সাইন্স ও ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংএ সেরা ফলাফল করে বের হন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া শেষ করার পর ওয়াল স্ট্রিটের বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন তিনি – যার মধ্যে ফিটেল, এবং ইনভেস্টমেন্ট ফার্ম “D.E.Shaw” উল্লেখযোগ্য। D.E.Shaw তে কাজ করতে গিয়ে জেফ অসাধারন সাফল্যের দেখা পান। ১৯৯০ সালে তিনি ফার্মের ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে পদন্নোতি লাভ করেন। এই প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সময়েই তিনি তাঁর স্ত্রী ম্যাকেনজির সাথে পরিচিত হন।

ফিন্যান্সে একটি দারুন ক্যারিয়ার গড়ে তোলার পরও বেজোস ই-কমার্সে বিনিয়োগ করার ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেন। ১৯৯৪ সালে তিনি চাকরি ছেড়ে দিয়ে সিয়াটলে চলে গিয়ে একটি অনলাইন বুক শপ খুলে ইন্টারনেট মার্কেটিং জগতে পা দেন। সেই সময়ে ইন্টারনেট মার্কেটিং খুবই অপ্রচলিত একটি বিষয় ছিলো।

আমাজন.কম প্রতিষ্ঠা:

বেজোস তার গ্যারেজে অল্প কয়েকজন কর্মী নিয়ে তাঁর নতুন কোম্পানীর জন্য সফটওয়্যার তৈরীর কাজ শুরু করেন। পরবর্তীতে তাঁরা দুই বেডরুমের একটি এ্যাপার্টমেন্টে কাজ শুরু করেন এবং ধীরে ধীরে একটি পরীক্ষামূলক ওয়েবসাইট চালু করেন।

জেফ বেজোস, আমাজন.কম
[amazon এর প্রথমদিকে তাদের একমাত্র পন্য বইয়ের সাথে তরুণ জেফ]

১৯৯৫ সালের ১৬ই জুলাই ৩০০ জন বন্ধুকে বেটা টেস্টিং এর জন্য ডেকে সাইট উদ্বোধন করেন। সাইটের নাম দেয়া হয় দক্ষিন আমেরিকার বহুশাখা বিশিষ্ট নদী আমাজন এর নামে।

তিনি যা আশা করেছিলেন, কোম্পানীর প্রাথমিক সাফল্য তারচেয়ে অনেক ভালো ছিলো। পত্রপত্রিকায় কোনও রকম বিজ্ঞাপন দেয়া ছাড়াই প্রথম ৩০ দিনেই আমাজন আমেরিকা সহ আরও ৪৫টি দেশে বই বিক্রী করে ফেলে। দুই মাসের মধ্যেই আমাজনের সাপ্তাহিক বিক্রয়ের পরিমান ২০,০০০ ডলারে পৌঁছায়। জেফ বেজোস ও তাঁর টিম নিজেরাও এত কম সময়ে এতটা সাফল্য আশা করেননি।

১৯৯৭ সালে আমাজন বেটা টেস্টিং শেষ করে পাকাপাকি ভাবে ব্যবসা শুরু করে।

first office of amazon
[আমাজনের প্রথম অফিসে জেফ বেজোস]

অনেক মার্কেট বিশেষজ্ঞ ধারনা করেছিলেন আমাজন এই সাফল্য ধরে রাখতে পারবে না, কারণ সব প্রতিষ্ঠানই তাদের পন্যের জন্য এমন অনলাইন শপ খুলে বসবে। কিন্তু দুই বছরের মধ্যেই তাদের এই সন্দেহকে ভুল প্রমাণ করে আমাজন সমস্ত প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে ই-কমার্সের এক নম্বর সাইট হয়ে দাঁড়ালো।

১৯৯৮ সালে বেজোস তাঁর প্রতিষ্ঠানের সেবা শুধু মাত্র বইয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ না রেখে সিডি ও ভিডিও টেপ বিক্রী শুরু করলেন। তারপর বড় বড় খুচরা বিক্রয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে চুক্তির মধ্যদিয়ে একে একে পোশাক, ইলেক্ট্রনিক্স, খেলনা ও অন্যান্য পন্যও যোগ হল। যেখানে ৯০ দশকের প্রচুর ডট কম সাইট আজ নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে; সেখানে আমাজন ১৯৯৫ সালের ৫লক্ষ ১০হাজার মার্কিন ডলার বাৎসরিক বিক্রয় দিয়ে শুরু করার ১০ বছরের মাথায় তাকে ১৭০ কোটি মার্কিন ডলারে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিলো। যার ধারাবাহিকতা এখনও বজায়ে আছে।

২০০৬ সালে আমাজন ডট কম পন্য বিক্রয়ের পাশাপাশি তাদের “Video on Demand” সার্ভিস চালু করল, যার প্রাথমিক নাম ছিল “Amazon Unbox” – পরবর্তীতে যা “Amazon instant Video” নামে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

২০০৭ সালে আমাজন তাদের ডিজিটাল বই পড়ার একটি স্মার্ট ডিভাইস “Kindle” বাজারে ছাড়লো, যার মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা বই পড়ার পাশাপাশি বই কেনা, ডাউনলোড, ও স্টোর করার সুবিধা পেলেন।

সেই বছরই বেজোস ‘Blue Origin’ এ তাঁর বিনিয়োগের ঘোষনা দেন। Blue Origin তাদের গ্রাহকদের অর্থের বিনিময়ে মহাকাশ ভ্রমণের সুযোগ প্রদান করবে।

বেজোস ২০০১ সালে ‘Kindle Fire’ বাজারে ছাড়ার মাধ্যমে ট্যাব মার্কেটে প্রবেশ করেন। পরবর্তী সেপ্টেম্বরে তিনি নতুন কিন্ডলে ফায়ার এইচডি’র ঘোষণা দেন, যেটির ডিজাইন করা হয়েছিল এ্যাপলের আই প্যাডের সাথে প্রতিযোগীতা করার জন্য।

ওয়াশিংটন পোস্ট ক্রয়:

২০১৩ সালের আগস্ট মাসের পাঁচ তারিখে বিশ্বখ্যাত পত্রিকা ওয়াশিংটন পোস্ট এর সমস্ত প্রকাশনা কিনে নিয়ে পৃথিবীর প্রায় সবগুলো বড় নিউজ এজেন্সীর খবরের শিরোনামে উঠে আসেন বেজোস। প্রতিষ্ঠানটি কিনতে তিনি ২৫ কোটি মার্কিন ডলার খরচ করেন বাংলা টাকায় যার মূল্য ২১০০ কোটি টাকা! এর ফলে ওয়াশিংটন পোস্টের ওপর গ্রাহাম পরিবারের ৪প্রজন্মের মালিকানার ইতি ঘটে।

পত্রিকা বিক্রী করার পর পোস্টের সদ্যবিদায়ী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডোনাল্ড.ই গ্রাহাম একটি বিবৃতিতে বলেন “পোস্ট আগের মালিকানার অধীনেও টিঁকে থাকত এবং অদূর ভবিষ্যতে লাভের মুখও দেখতে পারত। কিন্তু আমরা চাইছিলাম আমাদের প্রতিষ্ঠান শুধুমাত্র টিঁকে থাকার চাইতেও বেশিকিছু করুক। আমি বলছিনা এর (বিক্রয়ের) ফলে প্রতিষ্ঠানটি নিশ্চিত ভাবে সাফল্যের পথে ফিরে আসবে, কিন্তু এর ফলে সাফল্যের পথে ফিরে আসার সম্ভাবনা অনেকাংশে বেড়ে গেল।” – জেফ বেজোসের ব্যবসায়িক ক্ষমতার প্রতি এমনই ভরসা গ্রাহামের।

আমাজন প্রাইম:

২০১৩ সালের ডিসেম্বরে বেজোস আমাজনের প্রকল্পের কারনে আবার আলোচনায় উঠে আসেন। প্রকল্পটির নাম “আমাজন প্রাইম এয়ার”। এই প্রকল্পের অধীনে বেজোসের কোম্পানী এমন কিছু রিমোট কন্ট্রোল চালিত ড্রোনকে কাজে লাগানোর পরিকল্পনা করে, যেগুলো নির্ভুল ভাবে ক্রেতাদের কাছে পন্য পৌঁছে দিতে পারে।

বেজোসের কথায়, এই ড্রোনগুলো পাঁচ পাউন্ড পর্যন্ত ওজনের মালামাল বহন করতে পারে, এবং সেগুলো কোম্পানীর পন্য বিপনন কেন্দ্র থেকে ১০ মাইল পর্যন্ত এলাকা কাভার করতে পারবে। তিনি আরও বলেছিলেন (২০১৩ এর পরবর্তী) চার থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে প্রাইম এয়ার বাস্তবতার মুখ দেখতে পারে।

ব্যর্থতা:

একজন সফল মানুষ হতে গেলে ব্যর্থতার অভিজ্ঞতা থাকতেই হয়। এমন কোনও সফল মানুষ পাওয়া যাবে না যিনি জীবনের কোনও না কোনও পর্যায়ে ব্যর্থ হননি। জেফ বেজোসের মত একজন অসাধারন সফল মানুষের জীবনেও ব্যর্থতা এসেছিল।

২০১৪ সালে আমাজন যখন মোবাইল ফোনের বাজারে নামার জন্য ’ফায়ারফোন’ বাজারে আনে, সেই প্রকল্পের কিছু কিছু ভুল বেজোসের নজর এড়িয়ে গিয়েছিল। ফলাফল হিসেবে পন্যটি এর জটিল ইউজার ইন্টারফেসের কারণে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে। পরবর্তী বছর আমাজন আর তাদের ফোন বাজারে ছাড়েনি।

আমাজন স্টুডিওস :

আমাজন স্টুডিওস এর মাধ্যমে ভিডিও প্রোডাকশন ব্যবসায় বেজোস বেশ বড় সাফল্য পান। ২০১৩ সালে বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠান প্রযোজনা করার পর ২০১৪ সালে “Transperent” ও “Mozart in The Jungle” এই দু’টি হিট টিভি শো নির্মাণ করে । ২০১৫ সালে আমাজন স্পাইক লি’র “Chiraq” এর মধ্যদিয়ে তাদের প্রথম অরিজিনাল ফিচার ফিল্ম মুক্তি দেয়।

২০১৬ সালে বেজোস “Star Trek Beyond” সিনেমায় একটি এলিয়েনের চরিত্র করে অভিনেতার খাতায় নাম লেখান। এখানে বলে রাখা ভালো, অনেক জিনিয়াসের মত তিনিও ছোটবেলায় স্টার ট্রেকের পাগল ভক্ত ছিলেন।

২০১৭ এর জুলাইয়ে কিছু সময়ের জন্য তিনি বিল গেটসকে টপকে বিশ্বের এক নম্বর ধনী ব্যক্তি হিসেবে উঠে আসেন। তবে কিছু পরেই আবার তিনি দুই নম্বরে চলে যান। অক্টোবরে আবার তিনি এক নম্বরে উঠে আসেন।

ইতিহাসের সবচেয়ে সম্পদশালী ব্যক্তিদের একজন:

২০১৮ এর জানুয়ারিতে ব্লুমবার্গের হিসেব মতে তাঁর মোট সম্পদের পরিমান গননা করা হয় ১১৮.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার – অর্থা‌ৎ প্রায় এগারো হাজার দুইশো কোটি মার্কিন ডলার । তাঁর আগে পৃথিবীর ইতিহাসে হাতে গোণা কয়েকজন মানুষ এত সম্পদের মালিক হতে পেরেছেন।

বেজোস যদি তাঁর চাকরি আর নিশ্চিত জীবনের নিরাপত্তা ছেড়ে আমাজন শুরু করার ঝুঁকি না নিতেন, তাহলে তাঁর নিজের জীবন তো বটেই, পৃথিবীর চেহারাটাও হয়তো অন্যরকম হত।

পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি বেজোসের জয়যাত্রা এখনও অব্যহত আছে। কে জানে তিনি কোথায় গিয়ে থামবেন?

জেফ বেজোসের জীবনী কেমন লাগলো তা আমাদের কমেন্ট করে জানান। যদি মনে হয় বেজোস এর জীবনী থেকে অন্যরা অনুপ্রাণিত হতে পারবে, বা কিছু শিখতে পারবে – তবে লেখাটি শেয়ার করে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন। সাফল্যের পথে প্রতিটি পদক্ষেপে লড়াকু আপনার সাথে আছে।

পোস্টটি শেয়ার করুন !