বই পড়ার উপকারিতা গুলোর মধ্যে প্রধান হল, বই পড়লে জ্ঞান বাড়ে। তবে, এই কথা আমরা সবাই জানি। জ্ঞানের সাথে সাথে বই বিনোদনেরও উৎস। কিন্তু এর বাইরেও বই পড়ার রয়েছে আরও বেশকিছু উপকারিতা যেগুলোর বিষয়ে সচরাচর শোনা যায় না। আজ আমরা তেমনই আটটি উপকারিতা জানব। হয়তো এগুলো বই পড়ার ব্যাপারে আপনাকে আরও আগ্রহী করে তুলবে।
আপনি যদি বই পড়া পছন্দ না করেন, তবে সত্যিই অনেক কিছু থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অনেকেই বই পড়ার আশ্চর্য উপকারিতার কথা বোঝেন না। কারও কাছে এটি সময় নষ্ট মনে হয়, কারও কাছে এটি বোরিং – এমন সব কারনে অনেকেই বই পড়া থেকে দূরে থাকেন।
কিন্তু সত্যি কথা বলতে, বই পড়লে আর যাই হোক, সময় নষ্ট হয় না। আপনি যে বইই পড়েন না কেন, আপনি নতুন কিছু জানতে পারবেনই। গল্পের বই থেকেও অনেক কিছু শেখার আছে। শুধু শেখার বিষয় ছাড়াও বই পড়ার আরও বহু উপকারিতা আছে, যার কিছু কিছু হয়তো ‘বইয়ের পোকা’রাও জানেন না।
বই পড়ার অভ্যাস থাকলে আলঝেইমার বা স্মৃতিভ্রষ্টতা রোগের সম্ভাবনা কমে যায়। এই রোগটি কতটা ভয়ঙ্কর, তা জানতে ‘Alzheimer’ লিখে গুগলে একটি সার্চ দিয়ে দেখতে পারেন। এই রোগে আক্রান্তরা একটা সময়ে গিয়ে কিছুই মনে রাখতে পারেন না। এমনকি নিজের একান্ত আপন মানুষদেরও চিনতে কষ্ট হয়।
টিভি/সিনেমা দেখা অথবা রেডিও শোনার চেয়ে বই পড়া আপনার ব্রেনের জন্য অনেক বেশি উপকারী। অনেক্ষণ ধরে টিভি/মনিটরের পর্দায় তাকিয়ে থাকলে ব্রেন সেল বা মস্তিষ্কের কোষ নষ্ট হয়; অন্যদিকে বই পড়লে তা মাথায় ভাবনা ও কল্পনার জন্ম দেয়, যা আপনার ব্রেনের জন্য ব্যায়ামের মত। এতে ব্রেন আরও শক্তিশালী ও কার্যকর হয়। বই পড়ার ফলে মানুষের মাঝে নতুন নতুন চিন্তার জন্ম হয়, ভাবনা ও বিবেচনার নতুন পথ খুলে যায়।
আজ আপনাকে আমরা বই পড়ার এমন ৮ টি অনন্য উপকারিতার কথা বলব, যাতে করে, আশা করা যায় আপনি বই পড়ার প্রতি কৌতুহলী ও আগ্রহী হয়ে উঠবেন।
বই পড়ার ৮টি অনন্য উপকারিতা:
০১. জীবনের নতুন নতুন দর্শন খুঁজে পাবেন
বই পড়ার মাধ্যমে আপনি সব সময়েই নতুন নতুন বিষয়ের সাথে পরিচিত হবেন। প্রতিটি বই থেকে কিছু না কিছু নতুন জানতে পারবেন। যে কোনও সমস্যা সমাধানের নতুন নতুন পথ ভাবতে পারবেন।
জগতের প্রতি, জীবনের প্রতি আলাদা আলাদা দর্শনের কথা জানতে পারবেন। ভিন্ন ভিন্ন মানুষ ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ে কিভাবে চিন্তা করে – তার একটা ভাল ধারনা পাবেন।
একজন লেখকের দীর্ঘদিনের ভাবনা, পর্যবেক্ষণ আর গবেষণার ফসল এক একটি বই। আপনি মাত্র কয়েক ঘন্টায়, বা কয়েক দিনে একজন মানুষের বছরের পর বছর ধরে গোছানো চিন্তাধারা, গবেষনা, জ্ঞান নিতে পারবেন – যা আপনার সামনের দিকে এগিয়ে চলার পথে সহায়তা করবে।
প্রতিটি বিষয়ে আলাদা আলাদা চিন্তাধারার সাথে পরিচিত হওয়ার ফলে আপনি একটি বিষয়কে বিভিন্ন দিক থেকে বিচার করতে পারবেন।
বই পড়ার অভ্যাস করলে আপনি নিজেই একটা সময়ে বুঝতে পারবেন আপনার মনের অনেক নতুন জানালা খুলে যাচ্ছে। যে জানালাগুলো এতদিন বন্ধ ছিল। নিজেকে, জীবনকে আর পৃথিবীকে আপনি একটি আলাদা দৃষ্টিতে দেখতে শুরু করবেন।
০২. বই পড়া আপনাকে আরও বিচক্ষণ করে তুলবে
বইপড়া আপনাকে মানুষ হিসেবে সমৃদ্ধ করবে। বই পড়ার ফলে আপনি আপনার আগ্রহের বিষয়গুলোকে আরও ভালভাবে বুঝতে পারবেন। আপনার জ্ঞান যত বাড়বে, আপনার বুদ্ধি ততই ধারালো হবে।
প্রতিটি বিষয়কে আপনি আরও ভালভাবে ব্যাখ্যা করতে পারবেন। কোনও বিষয়ে কাউকে বোঝাতে গেলে, বা নিজে বুঝতে গেলে সেই বিষয়ে যত জ্ঞান আপনার থাকবে, কাজটি আপনার জন্য ততটাই সহজ হয়ে যাবে।
আর এই ক্ষেত্রে বই পড়ার কোনও বিকল্প নেই। প্রতিটি নতুন পৃষ্ঠা আপনাকে একটু একটু করে আরও বিচক্ষণ বা স্মার্ট করে তুলবে। বই পড়া মানে মস্তিষ্ক বা বুদ্ধিমত্তাকে প্রশিক্ষণ দেয়া। জ্ঞান বাড়ার সাথে সাথে বুদ্ধি দ্রুততর হয়।
যে কোনও সমস্যার সমাধান আপনি আগের চেয়ে দ্রুত করতে পারবেন। এর কারণ, একটি সমস্যার বিভিন্ন দিক আপনার জানা থাকবে, ফলে সমাধান বের করতেও আপনার তুলনামূলক কম সময় লাগবে।
পৃথিবীর বেশিরভাগ বড় বড় সফল মানুষের মারাত্মক বই পড়ার নেশা ছিল, বা এখনও আছে। ওয়ারেন বাফেট, বিল গেটস থেকে শুরু করে ভিঞ্চি, আলেকজান্ডার, নেপোলিয়ন, ম্যান্ডেলা – এদের সবাই দারুন ভাবে বইয়ের ভক্ত ছিলেন।
০৩. বই পড়া কল্পনা ও সৃষ্টিশীলতাকে শক্তিশালী করে
আপনি যে কোনও বড় লেখককে জিজ্ঞাসা করুন, লেখক হওয়ার জন্য সবচেয়ে জরুরী বিষয় কোনটি? প্রায় সবাই বলবেন – পড়ার অভ্যাস।
কল্পনাশক্তি আর সৃষ্টিশীলতাকে শক্তিশালী করার জন্য বই পড়ার চেয়ে ভাল কোনও উপায় বোধহয় আর নেই।
আপনি যখন একটি বই পড়েন, তখন বইয়ের ঘটনা, চরিত্র – সবকিছুই আপনাকে কল্পনা করে নিতে হয়।
আপনি যখন বই পড়বেন তখন আপনি একটি নতুন জগতে প্রবেশ করবেন। একটু একটু করে সেই জগত আর তার বাসিন্দাদের ছবি আপনার মনে স্পষ্ট হয়ে উঠতে থাকবে। সেইসাথে ধারালো হতে থাকবে আপনার কল্পনাশক্তি। আপনার মাথায় নতুন নতুন আইডিয়া আসতে থাকবে। অনেক কালজয়ী লেখকই স্বীকার করেন যে তাঁদের নতুন অনেক গল্পই এসেছে আরও দশটি গল্প পড়ার পর।
একইভাবে একজন চিত্রশিল্পী, একজন পরিচালক – বা অন্য যে কোনও ধরনের সৃষ্টিশীল কাজই করুন না কেন, বই পড়া আপনার সেই সৃষ্টিশীলতাকে বাড়িয়ে দেবে বহুগুণে।
০৪. বই পড়লে স্মৃতিশক্তির উন্নতি হয়
মানুষের মন একটা আশ্চর্য জিনিস। যে কোনও সুপার কম্পিউটারের চেয়ে মানুষের মন শক্তিশালী। যে কোনও প্রাণী বা যন্ত্রের থেকে মানুষের মস্তিষ্ক সবকিছু অনেক দ্রুত বুঝতে ও মনে রাখতে পারে।
কিন্তু এই আশ্চর্য ক্ষমতাটিকে খুব কম মানুষই ঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারে। আমরা যখন শুধু শুধু বসে থাকি, তখন আমাদের মাথায় নানান আজেবাজে ও অপ্রয়োজনীয় চিন্তা ভিড় করে। এরফলে আমরা আমাদের মস্তিষ্কের সত্যিকার ক্ষমতা কাজে লাগাতে পারি না।
বই পড়ার মাধ্যমে আপনি যখন সময় কাটাতে থাকবেন, তখন গঠনমূলক চিন্তা আপনার মাথায় সবসময়ে জমা হতে থাকবে। এতেকরে সেগুলো আপনার মস্তিষ্কে অপ্রয়োজনীয় ভাবনা আসতে দেবে না।
আমাদের চেতন মনে যখন প্রতিনিয়ত উপকারী ও গঠনমূলক তথ্য ও মেসেজ যেতে থাকবে, মন তখন সেগুলোকে ধরে রাখার চেষ্টা করবে। বইয়ের পাতায় সব সময়েই কাজে লাগার মত কোনও না কোনও তথ্য বা কথা থাকে।
পড়তে পড়তে আপনার নিজেরই মনে হবে যে এগুলো মনে রাখা দরকার। মনে রাখার চেষ্টা করতে করতে একটা সময়ে দেখবেন যেটাই আপনি মনে রাখতে চাচ্ছেন – সেটাই সহজে মনে থাকছে। বইয়ের ব্যাপারগুলো মনে রাখার প্রাকটিস করতে করতে আপনার পুরো স্মৃতিশক্তি উন্নত হয়ে উঠবে।
০৫. সফল ও জ্ঞানীদের কাছ থেকে সহজে জ্ঞান নিতে পারবেন
আগেও একবার বলেছি, একটি বই একজন বা একাধিক লেখকের দীর্ঘ দিনের অর্জিত জ্ঞান, গবেষণা আর চিন্তার ফসল।
একজন লেখক যিনি ১০ বছর ধরে গবেষণা ও চিন্তা করে একটি বই লিখেছেন – আপনি সেই বইটি পড়লে কয়েক ঘন্টা বা কয়েক দিনে সেই দশ বছরের জ্ঞান পেয়ে যেতে পারেন।
একটি বইয়ের একটি লাইন আপনার জীবন বদলে দিতে পারে। কিন্তু সেই লাইনটি মাথায় আনতে লেখককে হয়তো বছরের পর বছর ভাবনাচিন্তা করতে হয়েছে।
বিশেষ করে সেলফ হেল্প বা আত্মউন্নয়নমূলক বই গুলোতে বহু সফল মানুষরা তাঁদের চিন্তা ও দর্শনের কথা লেখেন। সেইসাথে লেখেন সফল হওয়ার পথে নির্দিষ্ট একটি সমস্যা তাঁরা কিভাবে সমাধান করেছেন। সেই পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে হয়তো আপনিও একই ধরনের একটি সমস্যার সমাধান খুব সহজে করে ফেলতে পারবেন।
কিন্তু বইটি পড়া না থাকলে হয়তো সেই সমাধান খুঁজে পেতে আপনাকে দীর্ঘদিন কষ্ট করতে হত। অথবা হয়তো সমাধানটি খুঁজেই পেতেন না। আবার ধরুন আপনার হঠাৎ করে মনে হল আপনি মিশরের পিরামিড সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান। এখন পিরামিডের ওপর যদি গবেষকরা পরিশ্রম করে বইগুলো না লিখতেন, তবে আপনাকেই হয়তো বছরের পর বছর ধরে সাধনা আর পরিশ্রম করে সেইসব তথ্য আর জ্ঞান অর্জন করতে হতো।
অথবা সময় আর সুযোগের অভাবে তা আপনার পক্ষে জানাই সম্ভব হতো না। একটি নতুন কোম্পানীকে কিভাবে বড় কোম্পানী বানাবেন, সেই কৌশল বের করতে হয়তো আপনার দশ বছর লাগতো, কিন্তু একজন সফল ব্যবসায়ীর লেখা জিরো টু ওয়ান নামের একটি বই হয়তো আপনার অনেকগুলো বছর বাঁচিয়ে দেবে।
বই পড়ার ফলে অন্য মানুষের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা আপনার কাছে চলে আসবে, যা জ্ঞান বাড়ানোর পাশাপাশি আপনার সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেবে বহুগুণে।
আপনার হয়তো এখন মনে হচ্ছে একটি বইয়ের পেছন পাঁচ ঘন্টা দেয়া মানে সময়টাই নষ্ট করা। কিন্তু ভেবে দেখুন, এই পাঁচ ঘন্টায় অর্জিত জ্ঞান হয়তো আপনাকে পাঁচ মাস বা পাঁচ বছর এগিয়ে দেবে।
আপনি হয়তো পিটার থেইল বা বিল গেটস এর মত সফল মানুষদের সাথে কখনও মুখোমুখী কথা বলতে পারবেন না। কিন্তু তাঁদের চিন্তাধারা জানার জন্য, তাদের সাফল্যের রহস্য জানার জন্য তাঁদের লেখা, বা তাঁদের নিয়ে লেখা একটি বই যথেষ্ঠ হতে পারে।
শত বছর আগে মারা যাওয়া একজন মহান বিজ্ঞানী বা মনিষী কিভাবে জীবনযাপন করতেন, কিভাবে তাঁরা চিন্তাভাবনা করতেন – তা জানতে একটি বই হতে পারে আপনার জন্য সেরা মাধ্যম।
০৬. ভাষার দক্ষতা বাড়ায়
শুধু যে সুন্দর করে লেখার জন্য পড়া জরুরী – বিষয়টি কিন্তু এমন নয়। আপনি হয়তো খেয়াল করে দেখবেন, বই পড়া মানুষেরা অন্যদের চেয়ে গুছিয়ে ও সুন্দর করে কথা বলেন। একজন বই পড়া মানুষের শব্দ ভান্ডার হয় সাধারন মানুষের থেকে কয়েক গুন সমৃদ্ধ।
বিভিন্ন বিষয় ব্যাখ্যা করতেও তিনি অন্যদের থেকে ভাল পারেন। কারন বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর জ্ঞান থাকে। ভাষা আর শব্দের ওপর দক্ষতা থাকলে, আপনি একটি সাধারন কথাকেও অনেক সুন্দর করে বলতে পারবেন। মানুষও আপনাকে শ্রদ্ধার চোখে দেখবে। বইয়ে বিভিন্ন লেখক বিভিন্ন স্টাইলে তাঁদের ভাবনা প্রকাশ করেন।
একটি ভাষা কতটা বৈচিত্রপূর্ণ – তা আপনি বই না পড়লে কখনওই বুঝতে পারবেন না। বই পড়ার অভ্যাস করলে ভাষার এই বৈচিত্রের সাথে পরিচিত হওয়ার পাশাপাশি, সেই বৈচিত্র আপনার কথার মাঝেও প্রকাশ পাবে। নতুন নতুন শব্দের সাথে আপনি প্রতিনিয়ত পরিচিত হতে থাকবেন।
আবার ধরুন আপনি ইংরেজী ভাষা ভাল করে শিখতে চাচ্ছেন, গাদা গাদা গ্রামার মুখস্থ করার থেকে আপনি যদি ইংরেজী গল্প, উপন্যাস অথবা অন্য কোনও বই পড়া শুরু করেন তবে শেখাটা আপনার জন্য অনেক বেশি সহজ হয়ে যাবে। নতুন নতুন শব্দ শেখার পাশাপাশি আপনি সহজে ভাষার স্টাইলটি ধরতে পারবেন – যাতে করে গ্রামার শেখা ছাড়াই পারফেক্ট ইংরেজী শেখা সম্ভব হবে।
০৭. বই লক্ষ্য অর্জনের প্রতি আগ্রহ ও বিশ্বাস বাড়িয়ে দেয়
আপনি যখন এমন একজন মানুষের কথা পড়বেন যিনি কিনা বিশাল বিশাল সব বাধা টপকে তাঁর লক্ষ্য অর্জন করেছেন, তখন তা আপনার মাঝে দারুন এক উদ্দীপনার জন্ম দেবে। যত খারাপ অবস্থাতেই আপনি থাকুন না কেন, সব সময়ে আপনি আপনার লক্ষ্য অর্জনের জন্য আগ্রহী আর আত্মবিশ্বাসী থাকবেন। সব সময়েই আপনি মোটিভেশন বা অনুপ্রেরণার মাঝে থাকবেন।
অনেকেই আছেন যাঁরা বড় কিছু করার স্বপ্ন দেখেন। কিন্তু ব্যর্থতার ভয় তাদের সামনে এগুতে বাধা দেয়। একটি ভাল মোটিভেশনাল বই এই ক্ষেত্রে কতটা উপকারে আসে – তা যে না পড়েছে, সে বুঝবে না।
পিটার থেইল এর “জিরো টু ওয়ান”, নেপোলিয়ান হিল এর “থিংক এ্যান্ড গ্রো রিচ” – এই ধরনের বইগুলো অনেকেরই জীবন বদলে দিয়েছে। হতাশা আর শঙ্কার জায়গায় তাঁদের মনে স্থান করে নিয়েছে সাহস আর বিশ্বাস।
মানসিক চাপ, হতাশা, দু:খ – এসবকে জয় করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার বিশ্বাস ও শক্তি আপনি পেতে পারেন একটি ভাল বই থেকে। এমনকি এই ধরনের গল্পের বইও আপনার অবচেতন মনে একটি ভাল অনুভূতি সৃষ্টি করবে, যার থেকে আপনি পাবেন আত্ববিশ্বাস ও অনুপ্রেরণা।
০৮. বই পড়লে মানসিক চাপ কমে
আপনি ব্যক্তিগত বা পেশাগত জীবনে যতই চাপের মাঝে থাকুন না কেন, একটি ভাল বই সব চাপ ভুলিয়ে দিতে পারে। আপনি যখন বইয়ের জগতে ঢুকে যাবেন, আপনার অবচেতন মন সেই জগতকেই বাস্তব বলে ভাবতে শুরু করবে।
এর কারন আমাদের মস্তিষ্ক কল্পনা আর বাস্তব এর পার্থক্য ধরতে পার না, তাই সে দুই অবস্থাতেই একই প্রতিক্রিয়া বা reaction দেখায়।
কাজেই, আপনি যখনই একটি ভাল বই পড়তে পড়তে কল্পনার রাজ্যে হারিয়ে যাবেন, তখন আপনার মনও সেই অনুযায়ী কাজ করবে। এক মনস্তাত্বিক গবেষণায় দেখা গেছে – মানুষ যখন কোনও ভাল বই পড়ে তখন মাংসপেশী অনেকটাই শিথিল হয়ে যায়, সেইসাথে হার্টবিটও অনেক বেশি স্বাভাবিক থাকে। এরফলে টেনশনও অনেক কম অনুভূত হয়।
পরিশিষ্ট:
বুদ্ধির যত্ন নেয়ার জন্য বই পড়ার কোনও বিকল্প নেই। বর্তমান ও অতীতের প্রায় সব সফল মানুষই গুরুত্বের সাথে এই অভ্যাসটির চর্চা করতেন। শরীরের যেমন বেড়ে ওঠার জন্য প্রয়োজন পুষ্টিকর খাদ্য ও ব্যায়াম, তেমনি বুদ্ধিবৃত্তির বেড়ে ওঠার জন্যও প্রয়োজন জ্ঞান ও কল্পনার চর্চা। তাই কষ্ট করে হলেও (যদি না থাকে) বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
সব শেষে, যদি মনে হয় এই লেখাটি পড়ে অন্যরাও বই পড়ায় উৎসাহ পাবেন, তবে শেয়ার করে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন।
এই ধরনের আরও লেখার জন্য নিয়মিত আমাদের সাথে থাকুন। সাফল্যের পথে লড়াকু সব সময়ে আপনার সাথে আছে।