ব্যবসা শুরু করতে চাই, কিন্তু হচ্ছে না! – কারণ, ৩টি মানসিক বাধা


ব্যবসা শুরু করতে চাই – এই কথাটি নিশ্চই অনেকের মুখে অনেকবার শুনেছেন। হয়তো নিজেও অনেককে বলেছেন। কিন্তু এই কথাটি যারা বলে – তাদের বেশিরভাগই শেষ পর্যন্ত ব্যবসা শুরু করতে পারেন না।

“ব্যবসা শুরু করতে চাই”- বলা খুব সহজ, করা কঠিন। কিন্তু যতটা কঠিন সবাই বলে – আসলে ততটা কঠিন নয়।

এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কষ্ট যার মাথায় কোনওদিন খুব ভালো কোনও নতুন বিজনেস এর আইডিয়া আসেনি। গাড়িতে চড়া অবস্থায়, রাস্তায় হাঁটার সময়ে – এমনকি ঘুমের মাঝেও মানুষের মাথায় এমন অনেক আইডিয়া আসে – যেগুলো কাজে লাগালে আসলেই তার জীবন বদলে যেত।

আপনার মাথায়ও হয়তো এমন দারুন কোনও আইডিয়া এসেছে – যা আসার পর মনে হয়েছে: “আমি এটা নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে চাই”

কিন্তু সেটা আর করা হয়ে ওঠেনি। সত্যি কথা বলতে এই ‘গ্রেট আইডিয়াগুলো’ আসলেই গ্রেট কিনা – তা বুঝতে হলে কাজ শুরু করতে হবে।

পৃথিবীর সবচেয়ে সফল আর অসফল মানুষদের মাঝে মাত্র ৩টি শব্দের ব্যবধান: “কাজ – শুরু – করা”।

কাজ শুরু না করলে – আপনার আইডিয়া যত ভালোই হোক – তাতে কোনও লাভ নেই। আজকের গুগল, ওয়ালমার্ট, ফেসবুক, বা আমাজন যে বিলিয়ন ডলারের বিজনেস – হয়তো এগুলোর চেয়েও অনেক ভালো আইডিয়া অনেকের মাথায় এসেছিল – কিন্তু সেগুলো কাজে না লাগানোর ফলে সেগুলোর নামও কেউ জানে না।

কোনও ভালো নতুন বিজনেস আইডিয়া পেলে সেটা শুধু মনের মধ্যে না রেখে, কাজে নামা উচি‌ৎ। কিন্তু সমস্যা হল মনের মধ্যে “ব্যবসা শুরু করতে চাই” কথাটা বার বার আসলেও, কেনজানি করা হয়না।

ব্যবসা শুরু করতে

ওয়েব ভিত্তিক সফল একটি উদ্যোগ Create & Goএর সহ প্রতিষ্ঠাতা এ্যালেক্স নার্নি বলেন তাঁরও এক সময়ে এরকম হত। মাসে ১ লক্ষ ডলার (প্রায় ৮৫ লাখ টাকা) আয় করা এই ওয়েবসাইট ব্যবসায়ীর মাথায় এর আগেও বেশ ভালো ভালো আইডিয়া আসলেও সেগুলো কাজে লাগানো হয়নি।

পরে এক সময়ে তিনি খুঁজে বের করেন যে ৩টি মূল মানসিক বাধা তাঁকে ব্যবসা শুরু করা থেকে দূরে সরিয়ে রাখছে। তিনি এগুলোর কারণ ও প্রতিকার খুঁজতে থাকেন। এবং একটা সময়ে পরীক্ষা নীরিক্ষা করতে করতে এই ৩টি মানসিক বাধা দূর করার উপায় খুঁজে বের করেন – যার ফলে তিনি তাঁর ব্যবসা শুরু করতে পেরেছিলেন। এবং সফল একটি ব্যবসা দাঁড় করাতে পেরেছিলেন।

আজ আমরা এ্যালেক্স নার্নির আবিষ্কৃত, ব্যবসা শুরু করতে চেয়ে শুরু না করার পেছনে ৩টি প্রধান মানসিক বাধা এবং এর সমাধানগুলো জানবো। চলুন শুরু করা যাক:

০১. ব্যর্থতা ও প্রতিযোগীতার ভয়:

যখনই আপনার মাথায় একটি নতুন বিজনেস আইডিয়া আসবে, তার সাথে আরেকটা জিনিসও আসবে। যার নাম, সন্দেহ। যে কোনও নতুন কিছু করতে গেলে এই সন্দেহ জিনিসটা আসবেই।

ভালো একটি আইডিয়া পাওয়ার প্রাথমিক উত্তেজনা কেটে যাওয়ার পরপরই কেন এই আইডিয়াটা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়, অথবা কি কি কারণে এটাতে আপনি ফেল করবেন – এইসব বিষয় মাথায় আসতে থাকে।

আপনি ধীরে ধীরে উপলব্ধি করতে থাকেন যে, কত বড় বড় প্রতিষ্ঠানের সাথে আপনাকে প্রতিযোগীতা করতে হবে। আপনার মনে হতে থাকে, বিজনেস আইডিয়া নিয়ে মাঠে নামার সাথে সাথেই আপনার ছোট আইডিয়াটি বড় বড় ব্র্যান্ডের ভিড়ে হারিয়ে যাবে।এই সন্দেহ ধীরে ধীরে ‘ব্যর্থতার ভয়ে’ রূপ নেয় এবং শেষ পর্যন্ত ‘ব্যবসা শুরু করতে চাই’ – ব্যাপারটা মাথার মধ্যেই ‘ভ্যানিশ’ হয়ে যায়।

এ্যালেক্স বলেন, “কোনও আইডিয়াই খারাপ না। একটি নতুন ব্যবসা বাজারে নেমে ব্যর্থ হলে, সেটা যে কাজে লাগাতে পারছেনা – তার দোষ। আইডিয়ার এখানে কোনও দোষ নেই”

সমাধান: কাজের ক্ষেত্রকে ছোট করে আনুন

একটা সময় ছিল যখন ডিজিটাল মার্কেটিং এর ব্যাপারটা ছিল নতুন। কিন্তু বর্তমানে প্রায় সবাই এই কাজ করছে। কিন্তু আপনার মাথায় যদি ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে নতুন কোনও আইডিয়া আসে – তবে, ‘অনেক ফার্ম আমার পেছনে লাগবে’ বা ‘এই মার্কেটে প্রতিযোগীতা বেশি’ ভেবে পিছিয়ে যাওয়ার কোনও মানে হয় না।

একটি প্রচলিত ব্যবসার মাঝেও ইউনিক আইডিয়া নিয়ে আসা যায়। তাছাড়া বড় একটি কাজের ক্ষেত্রের ছোট একটি বিষয়ে অনেক বেশি ভালে হলে – সেটাও অনেক বাড়তি সুবিধা দেয়।

এ্যালেক্স বলেন, “সার্ভিসের খুব ছোট একটা দিকে অনেক বেশি দক্ষ হয়ে, বা তার মাঝে নতুন কোনও আইডিয়া যোগ করার মাধ্যমে একটি পরিচিত সার্ভিসেও ইউনিক ফিচার নিয়ে আসা যায়। ফেসবুক মার্কেটিং অনেকেই পারে। এমন এজেন্সিও অনেক আছে। কিন্তু আপনি যদি শুধু ফেসবুক ভিডিও মার্কেটার ইসেবে নিজের ইউনিক পরিচয় গড়ে তোলেন – তবে ভিডিও মার্কেটিং ক্লায়েন্টরা অন্য এজেন্সি বাদ দিয়ে আপনার কাছেই আসবে”

থিংক এ্যান্ড গ্রো রিচ বইয়ের প্রধান একটি শিক্ষা হল, বড় ব্যাপারের সব অংশের বিষয়ে একটু একটু না জেনে, একটি ছোট্ট অংশের বিষয়ে সবকিছু জানা অনেক বেশি লাভজনক। এই ক্ষেত্রেও তাই। পুরো গাড়ি না বানিয়ে যদি গাড়ির একটি ছোট যন্ত্রাংশ আপনি সবার চেয়ে ভালো বানাতে পারেন – তবে আপনার কাছেই লোকেরা সেটার জন্য আসবে।

এ্যালেক্স বলেন, “আমার সবচেয়ে বড় প্রতিযোগী আমি নিজে। আমি অন্যদের দিকে তাকাই না। তাদের প্রতিযোগীতায় হারানোরও চেষ্টা করি না। আমি সব সময়ে নিজেকে ইউনিক ও সেরা করে তোলার চেষ্টা করি”

০২. এই ব্যাপারে আপনি তেমন কিছু জানেন না

আপনি হয়তো পড়াশুনা করেছেন, ফিজিক্স নিয়ে। কিন্তু আপনার মাথায় এ্যাডভার্টাইজিং ফার্ম নিয়ে একটি দারুন আইডিয়া এসেছে। আপনার ধারণা, এটা কাজে লাগাতে পারলে এটা দেশের সেরা এ্যাড ফার্ম হবে। কিন্তু তারপরই আপনার মনে হবে, আপনি তো বিজ্ঞাপন বা মার্কেটিং সম্পর্কে তেমন কিছুই জানেন না!

এ্যালেক্স বলেন, “আমি ব্যবসা শুরু করতে চাই, কিন্তু এই ব্যাপারে তেমন কিছুই জানি না – এই ধরনের ভাবনা আপনার মাথায় আসা মানে আপনি দারুন বিপদে পড়বেন। ব্যবসা শুরু না করে আপনি ‘সঠিক সময়ের’ অপেক্ষায় থাকবেন – যেটা কোনওদিনই আসবে না”

আপনি যদি ব্যবসা শুরু করার ব্যাপারে সত্যিই সিরিয়াস হন, তবে কিছু না জানলেও কাজ শুরু করে দেবেন। তারপর কাজ করতে করতে, এবং ভুল করতে করতেই বিষয়টি শেখা হয়ে যাবে। এই কাজটি সফল ভাবে করার জন্য এ্যালেক্স দু’টি বিষয় মনে রাখার পরামর্শ দেন:

 সমাধান: নিজের শেখার ক্ষমতার ওপর বিশ্বাস রাখুন

এ্যালেক্সের মতে, মানুষ মন থেকে চাইলে যে কোনওকিছু শিখতে পারে। আপনি কোনও ব্যাপারে ব্যর্থ হয়েছেন মানে আপনি সেই ব্যাপারে যথেষ্ঠ জানেন না। এখন আপনি যদি সেখানেই থেমে যান – তবে আর আপনার শেখা হবে না। ভবিষ্যতে সেই ব্যর্থতাটি এড়ানোর কৌশল নিয়ে চিন্তা করতে গেলেই বুঝবেন, আপনাকে আসলে কি কি নতুন জিনিস শিখতে হবে।

দেরি না করে শেখা শুরু করুন। তাহলেই দেখবেন আপনি আগের চেয়ে দক্ষ হয়ে উঠেছেন।

আপনি যদি সব সময়ে নতুন কিছু শেখার ব্যাপারে আগ্রহী থাকেন, তবে কোনও বিষয়ে না জানাটা ব্যবসা শুরু না করার কারণ হতে পারবে না।

ইলন মাস্ক স্পেস এক্স প্রতিষ্ঠার চিন্তা যখন করেন – তখন তিনি রকেট সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। কিন্তু তাঁর স্বপ্ন ছিল তাঁর রকেট কোম্পানীর রকেট একদিন মঙ্গল গ্রহে যাবে। স্পেস এক্সকে প্রতিষ্ঠা করার পর তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন যে, রকেট কোম্পানী শুরু করার আইডিয়া মাথায় আসার পর থেকেই তিনি রকেট নিয়ে বই পড়তে শুরু করেন। পড়তে পড়তেই তিনি কম্পিউটার প্রোগ্রামার থেকে রকেট বিজ্ঞানী হয়ে ওঠেন।

ইলন মাস্কের মত এমন আরও অনুপ্রেরণামূলক সত্যি কাহিনী চাইলেই আপনি জানতে পারবেন। এগুলোও আপনাকে অনুপ্রাণিত করবে। নিজের প্রতি সন্দেহ না করে নিজের শেখার ক্ষমতার ওপর আত্মবিশ্বাস রাখুন, তাহলে আর এই চিন্তা আপনাকে থামাতে পারবে না।

০৩. কোথা থেকে শুরু করবেন বুঝতে পারছেন না

নতুন ব্যবসা শুরু করতে চাই

এই ঝামেলাটা অনেকের হয়। একটি নতুন বিজনেস আইডিয়া মাথায় আসে, ব্যবসা শুরু করতে চায় – কিন্তু কিভাবে এবং কোথা থেকে শুরু করবে – তা বুঝতে পারে না।

ইংরেজীতে “Analysis Paralysis” বলে একটা কথা আছে। কোনও আইডিয়া নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা করতে করতে সেটা কিভাবে শুরু করবে – সেটাই ভেবে পায় না। প্রতিযোগীদের কৌশল নিয়ে গবেষণা করা, কাস্টোমার নিয়ে গবেষণা করা, মার্কেট নিয়ে এ্যানালাইসিস করা – ইত্যাদি করতে করতে মাথায় জট পাকিয়ে যায়। নতুন ব্যবসা যারা শুরু করতে চায়, তাদের অনেকেরই এটা জাতীয় সমস্যা। অনেক সময়ে এ্যানালাইসিস প্যারালাইসিসের রুগী বুঝতেও পারে না যে, ঠিক কি কারণে সে শুরু করতে পারছে না। যা আরও ভয়ঙ্কর।

সমাধান: মাত্র ৩টি লিস্ট করুন, এবং ছোট একটি প্ল্যান করুন

নতুন আইডিয়া নিয়ে এ্যানালাইসিস আর রিসার্চ করার ভূত একবার মাথায় চাপলে তাকে নামানো কঠিন। একটা সময়ে দেখা যায় এটা করতে করতেই আসল ব্যবসা শুরু করার সময় চলে যাচ্ছে।

“ক্রিয়েট এ্যান্ড গো” ফাউন্ডার এ্যালেক্স নার্নি বলেন, এত এ্যানালাইসিস না করে, একটি পরিকল্পনা তৈরী করে সেটা নিয়ে কাজে নেমে যেতে হবে। সেখানে কোনও ভুল থাকলে, সেটা আবার শুধরে নিয়ে কাজ করে যেতে হবে।

প্রাথমিক পরিকল্পনার জন্য আপনি ৩টি লিস্ট করতে পারেন।

লিস্ট ১:

মার্কেটের অন্যদের নিয়ে বেশি মাথা না ঘামিয়ে সবার আগে লিস্ট করুন আপনার সবচেয়ে শক্তিশালী জায়গা কোনটি। আপনি কি মার্কেটিং ভালো বোঝেন?, যে পন্য বা সেবা নিয়ে কাজ করতে চান, তার কোন দিকটা আপনি সবচেয়ে ভালো বোঝেন?পন্য বা সেবাটি মার্কেটে নামাতে গেলে কি ধরনের সাহায্য আপনার প্রয়োজন হতে পারে? – এইসব বিষয় লিস্ট করুন। তাহলে ফোকাস পুরোটাই আপনার নিজের ওপর থাকবে, এবং কোথায় কোথায় কমতি আছে – তা খুঁজে বের করে সেগুলো পূরণ করার কাজ শুরু করতে পারবেন। নিজের কমতিগুলো ঠিক করা শুরু করলে, এমনিতেই আপনি ব্যবসার প্রথম সত্যিকার কাজে হাত দিয়ে দেবেন।

লিস্ট ০২:

একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর (ধরুন ১ বছর পর) আপনি নিজের ব্যবসাকে কোথায় দেখতে চান, তা লিখুন। বছরের শেষে কত টাকা লাভ করতে চান, কতজন নিয়মিত কাস্টোমার চান, সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনার ব্র্যান্ডের কতজন ফলোয়ার চান – ইত্যাদি বিষয় লিস্ট আকারে লিখুন। তাহলেই দেখবেন আপনার ফোকাস নিজের ব্যবসার দিকে থাকছে, এবং আপনি ভালো একটি স্টার্টিং পয়েন্ট পাচ্ছেন, যেখান থেকে আপনি টার্গেটের দিকে এগিয়ে যেতে পারবেন।

উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আপনি হয়তো ১ বছর পর আপনার ব্র্যান্ডের ১০ হাজার সোশ্যাল ফলোয়ার চান। তাহলে এখনও যদি ফেসবুক বা ইন্সট্রাগ্রাম প্রোফাইল না খুলে থাকেন – তবে এমনিতেই আপনার প্রোফাইল খুল তে ইচ্ছা করবে। – এটাই আপনার প্রথম পদক্ষেপ হতে পারে।

লিস্ট ৩:

আপনার পন্য বা সেবার ক্রেতা কারা হবে, সেটা ঠিক করা খুবই জরুরী। তাই ৩ নম্বর লিস্টে ক্রেতাদের প্রাধান্য দিন।

কোন এলাকার লোকের জন্য আপনি পন্য বা সেবা বানাচ্ছেন, তাদের বয়স সীমা, পড়াশুনার লেভেল, কি খেতে পছন্দ করে, বিবাহিত না সিঙ্গেল – ইত্যাদি লিস্ট করুন। এই লিস্টটা ভালোমত করতে পারলে এমনিতেই আপনি তাদের জন্য পন্য বা সেবা তৈরী করার তাগিদ অনুভব করবেন।

————–

এই তিনটি লিস্টের মূল কথা হচ্ছে, একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য সৃষ্টি হয়ে গেলে কিভাবে সেটা নিয়ে কাজ করবেন – তা নিজেই বুঝতে পারবেন। তবে অবশ্যই এটা লিখিত হতে হবে। লক্ষ্য লিখে রাখার সুফল অনেক; তার মধ্যে একটি হল সব সময়ে লক্ষের নির্দিষ্ট একটি ছক আপনার সামনে থাকবে – যেটা ধরে আপনি এগিয়ে যেতে পারবেন। “দি পাওয়ার অব সেল্‌ফ ডিসিপ্লিন” বইয়ের লেখক ব্রায়ান ট্রেসি লিখেছেন, “৩% মানুষ বাকি ৯৭% এর মিলিত আয়ের চেয়ে বেশি আয় করে! আরও মজার ব্যাপার হল, পৃথিবীর মাত্র ৩% মানুষ তাদের ছোট ও বড় লক্ষ্যগুলো লিখে রাখে!”

২০০৬ সালে ইউ.এস.এ টুডে ম্যাগাজিনে একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়।

গবেষকরা বেশকিছু মানুষের ওপর গবেষণা চালায়, যারা নতুন বছরে নতুন লক্ষ্য ঠিক করেছে। এইসব নতুন লক্ষ্য ঠিক করা লোকদের তাঁরা দুই ভাগে ভাগ করেন।  এক ভাগ তাদের নতুন বছরের লক্ষ্য গুলো লিখে রাখে।  আরেক ভাগ তাদের লক্ষ্য কোথাও লেখেনি।

এক বছর পর খোঁজ নিয়ে গবেষকরা অবাক করা তথ্য পান।

যেসব লোক তাদের লক্ষ্য গুলো লেখেনি – তাদের মাত্র ৪% সত্যি সত্যি লক্ষ্য পূরণে কাজ করেছে।  আর যারা তাদের লক্ষ্য লিখে রেখেছিল – তাদের ৪৪% তাদের লক্ষ্য পূরণ করেছে!

দুই দলের মধ্যে তুলনা করলে, লক্ষ্য লিখে রাখা লোকদের সাফল্যের হার, লক্ষ্য না লেখা লোকদের চেয়ে ১১০০% এরও বেশি!

কাজেই, কোথা থেকে শুরু করবেন – এ নিয়ে বেশি এ্যানালাইসিস না করে লিস্ট করতে বসে যান।  লিস্ট করার সময়েই আপনি বুঝবেন নতুন ব্যবসা শুরু করতে প্রথমে আপনাকে কি করতে হবে।

পরিশিষ্ট:

ব্যবসা বা অন্য যে কোনও আইডিয়া সফল হওয়ার প্রথম ধাপ হচ্ছে কাজ শুরু করা। কাজ যদি শুরু না করেন, তবে যত ভালো আইডিয়াই আপনার মাথায় আসুক না কেন – তার কোনও মূল্য নেই।

সারাদিন মাথায় ভালো ভালো আইডিয়া জেনারেট করা এবং ‘এটা নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে চাই’ – ভাবার চেয়ে যা আছে তাই নিয়ে শুরু করে দিন। বলাতো যায় না, এটাই হতে পারে আপনার জীবনের সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত।

আর এই সিদ্ধান্ত নেয়ার পথে ৩টি প্রধান মানসিক বাধা দূর করার জন্য এ্যালেক্স নার্নির উপদেশগুলো যদি আপনার একটুও কাজে লাগে – তাহলেই আমাদের প্রচেষ্টা সফল।

লেখাটির বিষয়ে আপনার যে কোনও মতামত আমাদের কমেন্ট করে জানান। আর যদি মনে হয় এই লেখাটি পড়ে অন্যরাও উপকৃত হবেন – তবে শেয়ার করে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন।

এই ধরনের আরও লেখার জন্য নিয়মিত আমাদের সাথে থাকুন। সাফল্যের পথে লড়াকু সব সময়ে আপনার সাথে আছে।

পোস্টটি শেয়ার করুন !