রাতের রুটিন কথাটা শুনতে অনেকটা অদ্ভূত লাগে। আমরা সকালের রুটিন, দিনের রুটিন – ইত্যাদির গুরুত্ব প্রায়ই শুনে থাকি – কিন্তু রাতের রুটিন নিয়ে তেমন একটা কথা হয় না।
কিন্তু সফল মানুষের রুটিন মানে শুধু সকালের রুটিনই নয়। সেখানে রাত কিভাবে কাটবে, রাতে কি কি করবে – এসব সুন্দর ভাবে গোছানো থাকে।
বিশ্বের অন্যতম ব্যবসায়িক পত্রিকা বিজনেস উইক এর লিস্টে এশিয়ার সেরা তরুণ উদ্যোক্তাদের মধ্যে ৪ নম্বরে স্থান পাওয়া লিওন হো আজকের বিশ্বের অন্যতম একজন ম্যানেজমেন্ট এবং সেলফ ডেভেলপমেন্ট কোচ। ২০০৫ সালে তাঁর প্রতিষ্ঠা করা ‘লাইফহ্যাক’ ম্যাগাজিন বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় সেলফ ডেভেলপমেন্ট ওয়েবসাইট। প্রতি মাসে ১ কোটি ২০ লক্ষের বেশি মানুষ তাঁর ম্যাগাজিন পড়েন।
লাইফহ্যাক এর প্রতিষ্ঠাতা-সিইও এবং বিশ্বের অন্যতম সেলফ ডেভেলপমেন্ট কোচ লিওন সকালের রুটিনের মত রাতের রুটিন কে সমান গুরুত্ব দেন। সকালে ওঠার পর থেকে তিনি কি করবেন – তা যেমন ছকে বাঁধা থাকে, তেমনি রাত নামার পর কি কি করবেন – অন্য অনেক সফল মানুষদের মত সেটাও রুটিন করা থাকে।
লিওনের মতে ”রাতের রুটিন সকালের রুটিনের মত এতটা জনপ্রিয় না হলেও, সফল ভাবে কাজ করার জন্য এটাও সমান জরুরী।”
কার্যকর রাতের রুটিন এর উপকারিতা:
একটি কার্যকর রাতের রুটিন মানে পরের দিনটা সুন্দর ও সফল ভাবে শুরু করার প্রস্তুতি। রাত যদি ঠিকমত কাটে, তবে পরের দিনটি এমনিতেই প্রোডাক্টিভিটি পূর্ণ হবে।
লাইফহ্যাক সিইও লিওন হো রাতের নির্দিষ্ট রুটিন থাকার ৩টি মূল উপকারিতার কথা বলেছেন:
– আপনার ঘুম অনেক বেশি গভীর ও কার্যকর হবে
– আপনি আরও ভালো ভাবে সকাল কাটাতে পারবেন, যাতে পুরো দিনটি ভালো যায়
– সবচেয়ে বড় কথা, সাফল্যের সবচেয়ে বড় অস্ত্র, মানে আপনার মস্তিষ্ক সারাদিন অনেক বেশি সতেজ ও কার্যকর থাকবে।
এই তিনটির বাইরেও রাতের রুটিনের আরও অনেক উপকারিতা রয়েছে। শরীর সুস্থ থাকা, মন ভালো থাকা, কাজের মাঝে শরীর ক্লান্ত অথবা ঘুম না আসা – ইত্যাদি। সব মিলিয়ে ভালো একটি রাতের রুটিন আপনার নিজের কার্যকারিতা বহুগুণে বাড়িয়ে দেবে – এবং আপনি আপনার সর্বোচ্চ ক্ষমতা অনুযায়ী পারফর্ম করতে পারবেন।
এসব উপকারিতা পাওয়ার জন্য আপনি লিওন হো এর নির্দেশিত রাতের রুটিন অনুসরন করতে পারেন। এই রাতের রুটিন অনুসরন করতে হলে আপনাকে প্রতি রাতে তিন ধাপে মোট ১৫টি কাজ করতে হবে। সংখ্যা দেখে ভয় পাবেন না। এই রুটিন এর বেশিরভাগ কাজই খুব সহজ ও ছোট ছোট।
চলুন তাহলে, জেনে নেয়া যাক –
রাতের রুটিন:
সন্ধ্যা:
০১. ৪টার পর চা-কফি খাবেন না
লিওনের মতে, রাতের রুটিন আসলে রাতের আগেই শুরু হয়ে যায়। বছরের বেশিরভাগ সময় জুড়ে ৫টার আশেপাশে সন্ধ্যা লাগে। ৪টা থেকে ৫টার মধ্যে আপনার কার্যক্রম ঘুমকে প্রভাবিত করে।
ক্যাফেইনের প্রভাব শরীরে ৬ ঘন্টা পর্যন্ত থাকে। আপনি যদি ৪টার পর চা-কফি খান, তবে তার প্রভাব রাত ১০-১১টা পর্যন্ত থাকে, যা আপনাকে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়তে বাধা দেবে। কাজেই, বিকেল ৪টার পর চা-কফি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। সেইসাথে, কোমল পানীয়তেও ভালো মাত্রায় ক্যাফেইন থাকে – তাই এগুলোও এড়িয়ে চলুন।
০২. যথেষ্ঠ পানি পান করুন
বেশি রাতে বেশি পানি খাওয়া কিডনীর জন্য খারাপ। কিন্তু তাই বলে শরীরকে শুকনো রাখা যাবে না। এতে করে ঘুম ভালো হয়না এবং সকালে এনার্জিটিক থাকতে পারবেন না। কিডনীর ক্ষতি না করে শরীরে যথেষ্ঠ পানির যোগান রাখার সবচেয়ে ভালো উপায় হল বিকাল থেকেই শরীরে যথেষ্ঠ পানির যোগান দেয়া। বিকাল থেকে রাতের খাবার খাওয়ার আগ পর্যন্ত বেশি করে পানি খান।
০৩. দিনের কাজ সন্ধ্যার মাঝে শেষ করুন
একটি দিনে যত কাজ করার পরিকল্পনা করবেন – সেগুলো সন্ধ্যার পরপর শেষ করার চেষ্টা করুন। তারপর ফ্রি হয়ে যান, যাতে নিজের জন্য সময় রাখতে পারেন। দরকার হলে দিনের কাজ একটু আগে আগে শুরু করুন। কিন্তু তাকে বেশি রাত পর্যন্ত নিয়ে যাবেন না। এতে করে মাথা কাজের চিন্তা থেকে দ্রুত ফ্রি হবে। নিশ্চিন্ত গভীর ঘুমের জন্য এটা খুব জরুরী।
০৪. ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত দুই ঘন্টা আগ থেকে ধূমপান করবেন না
দিনের কাজ শেষে আমরা অনেকেই একটু আধটু বন্ধু বা কলিগদের সাথে সময় কাটাই। আর এই সময়টাতে চা-কফি বা হাল্কা নাস্তার সাথে ধূমপানও চলে। ধূমপান যে স্বাস্থ্যের জন্য দারুন ক্ষতিকর – এটা সবাই জানলেও, অনেকেই এটা করে থাকেন। আপনি যদি ধূমপায়ী হয়ে থাকেন – তবে সেটা অবশ্যই ছেড়ে দেয়ার চেষ্টা করবেন। আর যদি তা না-ও করেন ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত দুই ঘন্টা আগে থেকে ধূমপান করা বন্ধ করুন। তাহলে আপনার মস্তিষ্ক এবং রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকবে এবং ঘুম ভালো হওয়ার পাশাপাশি চিন্তাশক্তিও আরও ভালোভাবে কাজ করবে। এতে পরদিন সকালে উঠে আপনি অনেক বেশি সতেজ অনুভব করবেন।
বাসায় ফিরে:
০৫. যত তাড়াতাড়ি পারেন বাসায় ফিরুন
জরুরী কাজ না থাকলে অফিস/ক্যাম্পাস/কাজ শেষে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব – বাসায় ফিরে আসুন। যত জলদি ঘরে ফিরতে পারবেন – তত জলদি মূল রাতের রুটিন শুরু করতে পারবেন। যোগাযোগ ও সম্পর্ক রক্ষার জন্য মাঝে মাঝে বন্ধু বা কলিগদের সাথে বাইরে সময় কাটালেও, সেটা যেন রুটিন হয়ে না যায়।
বাসায় ফিরেই প্রথমে হাতমুখ ধুয়ে ফ্রেশ হোন। এতে ক্লান্তি অনেকটা দূর হয়ে যাবে।
০৬. রাতে হাল্কা খাবার খান, এবং তাড়াতাড়ি খান
রাতের খাবার যদি বেশি ভারী হয়, তবে তা হজম হতে সময় লাগে, এবং ঘুমে তা যথেষ্ঠ ব্যাঘাত ঘটায়। শরীর ভারী হওয়া এবং আলস্য হওয়ার প্রধান একটি কারণও রাতে বেশি ও ভারী খাবার খাওয়া, এবং দেরি করে রাতের খাবার খাওয়া।
সবচেয়ে ভালো হয় রাতে যদি কম ক্যালোরি যুক্ত খাবার খেতে পারেন। চর্বি ও ডুবো তেলে ভাজা খাবার একদমই না খাওয়ার চেষ্টা করুন। রুটি আর সব্জী খেতে পারলে সবচেয়ে ভালো হয়। এবং এই খাবারটি যদি ৮টার মধ্যে খেয়ে ফেলতে পারেন – তবে তা ঘুম ও স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে ভালো। মাঝে মাঝে দাওয়াত এড়াতে না পারলে ভারী খাবার খাওয়া হয়েই যায়। কিন্তু সেখানেও যতটা পারা যায় কম খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। যতটা সম্ভব রাতের খাবারের এই রুটিন মেনে চলার চেষ্টা করুন।
০৭. পরের দিনের জন্য নিজেকে গোছান
সকালে উঠে সময় নষ্ট হওয়ার প্রধান একটি কারণ হল দিনের পোশাক, খাবার, ব্যাগ গোছানো – ইত্যাদি করতে যাওয়া। এতে সময়ের পাশাপাশি এনার্জি নষ্ট হয় – যা আপনি সত্যিকার কোনও কাজে লাগাতে পারতেন।
পরদিন সকালে উঠে আপনার যেসব জিনিস আগে প্রয়োজন হবে – সেগুলো আধাঘন্টা সময় নিয়ে গুছিয়ে ফেলুন। ব্যাগে কি কি জিনিস নেবেন, কি পোশাক পরবেন, লন্ড্রীতে কিছু দিতে হবে কি-না – ইত্যাদি কাজ গুছিয়ে ফেলুন। এতেকরে, সকালে আপনি অনেক রিল্যাক্সড থাকতে পারবেন এবং আপনার দিনটা অনেক গোছানো ভাবে শুরু হবে। এমনকি সকালে কি নাস্তা করবেন – সেটাও সম্ভব হলে রাতে ঠিক করে রাখুন।
অনেক সফল মানুষই এই কাজটি করেন, যাতে তাঁরা সকালে সত্যিকার প্রোডাক্টিভ কাজ ও ভাবনার জন্য এনার্জি ও সময় পান। সকালের রুটিন ঠিক রাখতে হলে রাতের রুটিন এর এই অংশটি ভালো করে মেনে চলুন।
০৮. রাত জেগে বিনোদন করবেন না
দিনে কাজ করার পাশাপাশি মানসিক ভাবে একটু হাল্কা হওয়ারও দরকার আছে। একটু সিনেমা/টিভি দেখা বা গেম খেলায় দোষের কিছু নেই। কিন্তু সেটার যেন নির্দিষ্ট সময় থাকে। ছুটির দিন ছাড়া লম্বা সময়ের সিনেমা না দেখাই ভালো। এক ঘন্টার বেশি টিভি দেখা বা গেম খেলা আপনার সময় নষ্ট করার সাথে সাথে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতার ওপর খারাপ প্রভাব ফেলে। কাজেই, এক ঘন্টার বেশি টিভি বা সিনেমা না দেখাই ভালো।
মাঝে মাঝে হয়তো কাজ বা পড়াশুনার খাতিরে রাত জাগতে হতে পারে – কিন্তু চেষ্টা করুন, রাত জেগে কাজ না করে সকালে আরেকটু তাড়াতাড়ি উঠে তা শেষ করার।
ঘুমানোর এক ঘন্টা আগে:
০৯. স্ক্রীণ থেকে চোখ সরিয়ে নিন
ঘুমানোর অন্তত এক ঘন্টা আগে ফোন/কম্পিউটার/টিভি – অর্থাৎ যে কোনও ধরনের স্ক্রীণ থেকে চোখ সরিয়ে নিন। এইসব ইলেকট্রনিক ডিভাইস থেকে নির্গত আলো “মেলাটোনিন” হরমোনের নি:সরণকে বাধাগ্রস্থ করে। গভীর ও তৃপ্তিদায়ক ঘুমের জন্য এই হরমোর নি:সরণ হওয়া জরুরী।
আপনার হয়তো এমন হয়েছে যে, রাতে অনেক ঘুমিয়েও সকালে এনার্জি পাচ্ছেন না, অথবা চোখ জ্বালাপোড়া করছে, অথবা মাথায় চাপা ব্যাথা হচ্ছে – তাহলে সম্ভবত আপনি ঘুমানোর আগে আগে স্ক্রীণের দিকে তাকিয়ে ছিলেন। – এতেকরে সকাল থেকেই ক্লান্ত লাগবে এবং মেজাজ খারাপ থাকবে। সোজা কথায়, আপনার দিনটাই খারাপ যাবে।
১০. বই পড়ুন
ঘুমানোর আগে স্ক্রীণের দিকে তাকিয়ে থাকা যতটা খারাপ, কাগজের বই পড়া ততটাই ভালো। মাত্র ৬ মিনিট বই পড়লে মানুষর শরীর ও মন অনেক শান্ত হয়ে যায়। কারণ ছাপার অক্ষর নার্ভ বা স্নায়ুকে শিথিল করে। এছাড়া আপনি যদি আপনার কাজের বা পড়াশুনার ক্ষেত্রের বইয়ের সামান্য একটু অংশও এই সময়ে পড়েন – তবে সেটা মেমোরিতে খুব ভালো সেট করবে।
১১. প্রার্থণা করুন
হ্যাল ইলরোড তাঁর বেস্ট সেলিং সেলফ ডেভেলপমেন্ট বই, মিরাকেল মর্নিং – এ সকাল বেলা ধ্যান বা প্রার্থণা করার কথা বলেছেন। এতে করে সারাদিন মন শান্ত ও পজিটিভ থাকে। সকাল বেলা পজিটিভ চিন্তা করার উপায় হিসেবে এটা যেমন দারুন, তেমনি ঘুমাতে যাওয়ার আগেও ইতিবাচক থাকার জন্য প্রার্থণা খুবই উপকারী।
সৃষ্টিকর্তার কাছে আজকের দিনটির জন্য কৃতজ্ঞতা জানান। আজকের দিনের ভালো ভালো বিষয়গুলো মনে করুন, এবং ধন্যবাদ জানান, এবং পরের দিনটা যেন ভালো যায় – সেই প্রার্থণা করুন। আজকের দিনটা কোনও কারণে ভালো না গেলেও গভীর ভাবে চিন্তা করলে দেখবেন সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞ হওয়ার জন্য অনেক কিছু মনে আসবে। দেখবেন অনেক ভালো মন নিয়ে ঘুমাতে যেতে পারছেন।
১২. পরবর্তী দিনের প্রথম ও মূল কয়েকটি কাজ শিডিউল করুন
এটা করতে দশ-পনেরো মিনিটের বেশি লাগার কথা নয়। পরের দিনের সব কাজের শিডিউল আপনাকে এখন করতে হবে না। কিন্তু অন্তত প্রধান তিনটি কাজ শিডিউলে লিখে রাখলে সকাল বেলার আর এটা নিয়ে টেনশন করতে হবে না। সকাল বেলা উঠে যদি কি করবেন – সেটা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে যান – তবে অনেকটা মানসিক এনার্জি এর পেছনে চলে যাবে – যা আপনি কাজটি করার পেছনে ব্যয় করতে পারতেন।
আমরা যখনই কোনও বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেই – তখনই আমাদের মস্তিষ্কের অনেকটা এনার্জি খরচ হয়। ছোট ছোট সিদ্ধান্ত – যেমন, কোন পোশাকটি পরবেন, কি খাবেন – এইসব সিদ্ধান্ত নিতে যে প্রক্রিয়া মস্তিষ্ক কাজে লাগায়, কোটি টাকার বিজনেস ডিসিশন নিতেও একই প্রক্রিয়া কাজে লাগায়।
কাজেই, এইসব ছোটখাট সিদ্ধান্ত ঘুমানোর আগে নিয়ে রাখতে পারলে পরদিন বড় সিদ্ধান্ত গুলো নেয়ার জন্য মস্তিষ্ককে অনেক বেশি এ্যাকটিভ অবস্থায় পাবেন।
১৩. গোসল করুন
আমরা সকাল বেলা গোসল করাকে প্রাধান্য দিয়ে থাকি। সকালে পরিচ্ছন্ন হওয়া ও গোসল করা জরুরী। কিন্তু রাতের বেলা দাঁত মাজার মত হাল্কা একটু গোসল করে নিলে ঘুম অনেক বেশি গাঢ় ও শান্তিপূর্ণ হয়। আপনি হয়তো নিজেও খেয়াল করেছেন, রাতে কোনও কারণে গোসল করলে শরীর ফুরফুরে লাগার পাশাপাশি ঘুম ঘুম একটা ভাব হয়।
রাতের গোসলটি গরম পানি দিয়ে করার চেষ্টা করবেন, কারণ তাতে শরীরের তাপমাত্রা কমে যায়। শরীরের তাপমাত্রা ৬০-৬৭ ডিগ্রী থাকার সময়ে যদি শুয়ে পড়তে পারেন তবে দারুন একটি গভীর ঘুম হবে। গোসল করার পরপর শরীর রুমের তাপমাত্রার সাথে নিজের তাপমাত্রা মিলিয়ে নেয়ার চেষ্টা করার সময়ে হঠাৎ করে শরীরের তাপমাত্রা নেমে যায়, এবং তা ৯০ থেকে ৬০ এর ঘরে চলে যায় – যা ঘুমিয়ে পড়ার জন্য আদর্শ তাপমাত্রা।
১৪. ঘুমানোর আগে শরীর শিথিল করুন
আপনি যদি শরীরকে শিথিল করে বা রিল্যাক্সড করে ঘুমাতে পারেন – তবে পরদিন সকালে অনেক বেশি এনার্জি নিয়ে উঠতে পারবেন। এর জন্য প্রথমেই চিত হয়ে শোন, তারপর বুক ভরে জোরে জোরে কয়েকবার শ্বাস নিয়ে মুখ দিয়ে ধীরে ধীরে ছাড়ুন। এভাবে কয়েকবার করার পর আপনার শরীর শিথিল হয়ে আসতে থাকবে। সেইসাথে সুন্দর একটি ঘুম চলে আসবে।
১৫. নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যান
দেহঘড়ি বলে একটা কথা আছে। ইংরেজীতে বলে ‘Body Clock’ – এই বডি ক্লককে যদি একটি নির্দিষ্ট রুটিন এর ভেতরে আনতে পারেন – তবে আপনার শরীর ও মস্তিষ্ক সব সময়ে হাই পারফরমেন্স দেবে। বডি ক্লক কে নির্দিষ্ট রুটিনে নিয়ে আসার জন্য সবচেয়ে সহজ ও গুরুত্বপূর্ণ উপায় হল প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়া। রাত ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে ঘুমানো এবং ৫টা-৬টার মধ্যে উঠে পড়া সুস্থতা ও সাফল্যের জন্য খুব ভালো ভূমিকা রাখতে পারে।
একটি ভালো ও কার্যকর রাতের রুটিন এর সবচেয়ে জরুরী বিষয়ই হল তাড়াতাড়ি এবং নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়া।
পরিশিষ্ট:
সকালের ও দিনের রুটিন কার্যকর ভাবে কাজে লাগাতে হলে, তার প্রস্তুতি রাতে নেয়াটা জরুরী। আপনি যদি লিওন হো এর রুটিন এর পুরোটা এখন কাজে লাগাতে না-ও পারেন, তবুও যেগুলো সবচেয়ে সহজ হয় – সেগুলো করার চেষ্টা করুন। এতে আপনার জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে – এবং আপনি নিজেই বাকিগুলো ফলো করার শুরু করার অনুপ্রেরণা পাবেন।
যে কোনও নতুন অভ্যাস গড়তে এবং আগের অভ্যাস পরিবর্তন করার জন্য ধীরে ধীরে শুরু করাই ভালো। তবে একবার ভালো অভ্যাস সৃষ্টি করতে পারলে তা আপনার সাথে সারাজীবন রয়ে যাবে – এবং আপনার সাফল্যে অবদান রাখবে।
রাতের রুটিন সম্পর্কে জানতে, এবং নতুন কার্যকর অভ্যাস গড়ে তুলতে এই লেখাটি যদি আপনাকে একটুও সাহায্য করে – তাহলেই আমাদের উদ্দেশ্য সফল।
লেখাটির বিষয়ে আপনার যে কোনও মতামত আমাদের কমেন্ট করে জানান। আপনার সব মতামতই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।
লেখাটি ভালো লাগলে এই পোস্টের নিচে রেটিং দিয়ে অনুপ্রাণিত করুন। যদি কোনও বিশেষ বিষয় নিয়ে অনুপ্রেরণামূলক বা শিক্ষনীয় লেখা চান – তবে সেটাও কমেন্ট করে জানান। চাইলে নিজেও লিখে পাঠাতে পারেন write@test.edaning.com – ইমেইল এ।
আর যদি মনে হয় এই লেখাটি পড়ে অন্যরাও উপকৃত হবেন – তবে শেয়ার করে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন।
প্রতিদিন অনুপ্রেরণামূলক লেখা ও টিপসের জন্য নিয়মিত আমাদের সাথে থাকুন। সাফল্যের পথে লড়াকু সব সময়ে আপনার সাথে আছে।