যে কোনও ক্ষেত্রে সেরা মানুষ হওয়ার উপায়: ব্রায়ান ট্রেসির ‘৩%’ ফর্মূলা


আপনি পৃথিবীর যে কোনও ক্ষেত্রের দিকে তাকাবেন, দেখবেন সেই ক্ষেত্রের সেরা ২০% লোকের জন্য বাকি ৮০% মানুষ কাজ করে।  সেই সেক্টর থেকে সৃষ্টি হওয়া ৮০% সুবিধা ও টাকা যায় ২০% এর দখলে।  কিছু লোক বলে যে এটা এই ২০% এর কারসাজি।  ব্যাপারটা কিন্তু মোটেও সেরকম নয়।  যারা ৮০% সুবিধা ভোগ করে, তারা আসলে নিজের যোগ্যতাতেই সেটা করে।  আর এই যোগ্যতা আপনিও অর্জন করতে পারবেন। যে কেউ চাইলে তার সেক্টরের টপ পারফর্মার হতে পারবে।  শুধু তাকে কিছু বিষয় জানতে হবে – এবং নিজের পুরোটা দিয়ে চেষ্টা করতে হবে।  সেটারই একটা রোডম্যাপ বা ফর্মূলা দিয়েছেন ব্রায়ান ট্রেসি।  যেটি আপনি এই লেখার মাধ্যমে সহজ ভাষায় জানবেন। 

ব্রায়ান ট্রেসি কে?

ব্রায়ান ট্রেসি একজন বিশ্বখ্যাত সেলফ্ ডেভেলপমেন্ট ও পারফর্মেন্স কোচ এবং একজন বেস্ট সেলিং লেখক।  তাঁর কোর্স ও বই সারা পৃথিবীতে কোটি কোটি কপি বিক্রী হয়েছে।  এবং তাঁর লেসন অনুসরন করে হাজার হাজার মানুষ তাদের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে ফেলেছেন।

আমরা অনেক সময়েই মোটিভেশনাল স্পিকার ও সেলফ ডেভেলপমেন্ট কোচদের গুলিয়ে ফেলি।  মোটিভেশনাল স্পিকিং আসলে সেলফ ডেভেলপমেন্ট কোচদের কাজের একটা অংশ।  প্রায় সব সেলফ ডেভেলপমেন্ট কোচ মোটিভেশনাল স্পিকার, কিন্তু সব মোটিভেশনাল স্পিকার সেলফ ডেভেলপমেন্ট কোচ নন।

সেলফ ডেভেলপমেন্ট ও পারফরমেন্স কোচদের শুধু কথা বললেই হয় না, তাঁদের কাজেও দেখাতে হয়।  নাহলে ক্যারিয়ার শেষ।  তাঁরা যে ফর্মূলা বের করেন, সেই ফর্মূলা বাস্তব জীবনে কাজ করতে হবে – না হলে তাঁদের বই কেউ পড়বে না, তাঁদের সেমিনারেও কেউ যাবে না।  এরকম বহু কোচ কালের আবর্তে হারিয়ে গেছেন।  যে কয়জন সদর্পে টিঁকে আছেন, এবং কার্যকর ফর্মূলা ও কোর্স বানিয়ে মানুষের জীবনে পরিবর্তন আনছেন – ব্রায়ান ট্রেসি তাঁদের অন্যতম।

তাঁর “ইট দ্যাট ফ্রগ”, “নো এক্সকিউসেস: দি পাওয়ার অব সেলফ ডিসিপ্লিন”, “ম্যাক্সিমাম এ্যাচিভমেন্ট” – বইগুলো এখনও হটকেকের মত বিক্রী হয়।  কারণ এই বইতে তিনি যে ফর্মূলাগুলো দিয়েছেন – সেগুলো খুবই সহজবোধ্য এবং সত্যিকার অর্থেই একজন মানুষের জীবন বদলে দিতে পারে।

আমরা আজ এমনই একটি ফর্মূলা আপনাকে শেখাবো, তাঁর “নো এক্সকিউসেস: দি পাওয়ার অব সেলফ ডিসিপ্লিন” বই থেকে নিয়ে।  এই ফর্মূলা ব্যবহার করে অনেকেই তাঁদের কাজের সেক্টরের টপ ২০% এ জায়গা করে নিয়েছেন। 

এর আগে আমরা এই বইটির বুক রিভিউ করেছি।  কিন্তু বুক রিভিউতে অনেক কিছুই বিস্তারিত দেয়া যায় না।  আমাদের মনে হয়েছে এই ফর্মূলাটি বিস্তারিত দিলে আমাদের পাঠকরা অনেক উপকৃত হবেন।  চলুন তাহলে আর দেরি না করে শুরু করা যাক।

ব্রায়ান ট্রেসির ‘৩%’ ফর্মূলা: “নো এক্সকিউসেস: দি পাওয়ার অব সেলফ ডিসিপ্লিন” থেকে

আপনি যদি আপনার ক্ষেত্রের সেরা ২০% এর একজন হতে চান, তবে প্রথমেই আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে, আপনার সেক্টরের টপ ২০% মানুষ গড়ে কত টাকা আয় করছে, এবং তাঁদের অর্জনগুলো কি কি; আজকালকার যুগে এই তথ্য পাওয়া তেমন কঠিন কিছু নয়।  পরিচিতদের প্রশ্ন করে, ইন্টারনেট ঘেঁটে, ইন্ডাস্ট্রি রিপোর্ট দেখে আপনি এই তথ্য সহজেই পেতে পারেন।

যখন আপনি আপনার সেক্টরের টপ ২০% এর গড় আয় এর তথ্য পাবেন, তখন সেটা নিজের লক্ষ্য হিসেবে লিখে ফেলুন।  সেই ইনকাম লেভেল অর্জন করার জন্য একটি প্ল্যান তৈরী করুন।  এবং প্রতিটা দিন সেই প্ল্যান বাস্তবায়নের জন্য কাজ করুন। যতদিন না আপনি সেই পরিমান ইনকাম করতে পারছেন, ততদিন আপনি অন্য কিছুতে মন দেবেন না।

** এখানে ইনকামের কথা বলা হয়েছে, কারণ ইনকামই সবচেয়ে সহজে মাপা যায়।  আপনি তাঁদের যে কোনও একটি অর্জনকে টার্গেট করে কাজ শুরু করলে তাদের পর্যায়ে যেতে পারবেন।  সাধারনত আয়ের তথ্য এবং অংক সহজে জানা যায়।

কিভাবে হবে?

প্রাথমিক টার্গেট কিভাবে সেট করবেন, সেটা নিশ্চই বুঝে গেছেন।  এবার আসা যাক ‘কিভাবে কি করবেন’ – সেই বিষয়ে।

লেখক বলেন, ব্যাপারটা আসলে খুবই সহজ।  শিখুন এবং কাজ করুন।  এটাই গোপন সূত্র।  যে কোনও ক্ষেত্রে যে যত বেশি জানেন, তিনি অন্যদের চেয়ে তত ভালো কাজ করতে পারেন – এবং অন্যদের দিয়েও করাতে পারেন।  একটি বিষয়ে আপনি যত বেশি জানবেন, তত বেশি আপনি তাকে ব্যবহার করে আয় করার উপায় বের করতে পারবেন।  সেইসাথে, অন্যদের চেয়ে বেশি জানার ফলে অন্যরাও আপনার কথা মেনে নিতে বাধ্য হবে।  নিশ্চই বুঝতে পারছেন কেন ২০% মানুষ ৮০% কে চালায়?

লেখক ব্রায়ান ট্রেসি একটা মজার তথ্য দিয়েছেন, আপনি যত জানবেন – ইনকাম ও পদের দিক দিয়ে তত ওপরে ওঠার পাশাপাশি আপনাকে নিচে নামানোও ততই কঠিন হয়ে যাবে।  চাইলেই কেউ আপনার জায়গা নিতে পারবে না।  ব্রায়ান ট্রেসির ৩% ফর্মূলা আসলে আপনাকে সেই জায়গায় পৌঁছানোর জন্য একটি রোডম্যাপ দেবে।  টপ ২০% যাওয়ার আরও অনেক ফর্মূলাই আছে।  এগুলোর মধ্যে এই ফর্মূলাটি বোঝা এবং চর্চা করা সবচেয়ে সহজ।

সেরা মানুষ হওয়ার উপায়: ‘৩%’ ফর্মূলা

এই ফর্মূলা ব্যবহার করতে গেলে প্রথমেই আপনাকে একটি কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে।  কঠোর হলেও তা কঠিন নয়।  কিন্তু একবার যখন নিয়ে ফেলবেন – তখন কঠোর ভাবে এই সিদ্ধান্ত পালন করতে হবে।

আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে, আপনি যা আয় করবেন তার ৩% আপনার নিজের উন্নয়নে বিনিয়োগ করবেন।  লেখক বলেন, এটি একটি ‘ম্যাজিক নম্বর’।  American Society for Training and Development – এর তথ্য অনুযায়ী, যে কোনও সেক্টরের সবচেয়ে লাভজনক টপ ২০% কোম্পানী তাদের বা‌ৎসরিক লাভের ৩% তাদের কর্মীদের উন্নয়ন ও প্রশিক্ষনের জন্য খরচ করে।

ব্রায়ান বলেন, আপনি যদি নিজেকে একটি সম্পদে পরিনত করতে চান, তবে আপনার আয়ের ৩% সব সময়ে নিজের জ্ঞান ও দক্ষতার উন্নয়নের পেছনে খরচ করুন।  আপনার জ্ঞান আর দক্ষতা যত বাড়বে, আপনি স্বাভাবিক ভাবেই আপনার কাজের ক্ষেত্রে ওপরে উঠতে থাকবেন, এবং আপনার আয়ও বাড়তে থাকবে।

ধরুন আপনার বা‌ৎসরিক আয় ১ লক্ষ টাকা।  সেক্ষেত্রে আপনাকে ৩ হাজার টাকা নিজের জ্ঞান ও দক্ষতার উন্নতিতে খরচ করতে হবে।  যদি সংখ্যা নির্দিষ্ট করে না রাখেন, তবে দেখবেন কিছুই করা হয়নি।  আপনি যখন একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য সামনে রাখবেন, (এক্ষেত্রে টাকার অংক) তখন দেখবেন আপনার মাথায় পরিকল্পনা আসছে, এবং আপনি সত্যিই কাজে নামতে পারছেন।

৩% অর্থ দিয়ে কি শিখবেন?

অনেকেই একটু সন্দিহান হয়ে পড়েন যে, আসলে এই ৩% অর্থ ঠিক কিভাবে নিজের পেছনে ব্যয় করবেন।  লেখক ব্রায়ান ট্রেসি একটি সত্যি গল্পের মাধ্যমে ব্যাপারটা পরিস্কার করেছেন।  চলুন বইয়ের অনুবাদ থেকে লেখকের নিজের জবানিতেই জেনে নেয়া যাক।


“কয়েক বছর আগে আমি ডেট্রয়েডে একটি সেমিনারে প্রশিক্ষণ দিচ্ছিলাম।  ব্রেকের সময়ে বছর ত্রিশেকের এক যুবক আমার কাছে আসল।  কুশল বিনিময়ের পর সে বলল যে, ১০ বছর আগে সে প্রথমবার আমার ৩% ফর্মূলার কথা জানতে পারে।  সেই সময়ে সে কলেজ শেষ না করেই বের হয়ে গিয়েছিল।  একটা ভাঙাচোরা গাড়ি চালাত, আর অফিস-টু-অফিস সেলস ম্যান হিসেবে বছর মাত্র ২০ হাজার মার্কিন ডলার আয় করতো।

১০ বছর আগে ব্রায়ানের প্রশিক্ষণ সেমিনার থেকে ৩% ফর্মূলা শিখে সে সিদ্ধান্ত নেয় বছরে ৬০০ ডলার নিজের যোগ্যতা বাড়ানোর পেছনে বিনিয়োগ করবে।  সে সেলস এর ওপরে লেখা বেশ কিছু বই কেনে, এবং পড়তে শুরু করে।  তারপর সে কিছু অডিও টিউটোরিয়াল কিনে সেগুলো থেকে শিখতে থাকে। সেইসাথে, কয়েকটি প্রশিক্ষণ সেমিনারে যোগ দেয়।  পুরো ৬০০ ডলার সে নিজের উন্নতির পেছনে খরচ করে। 

সেই বছরই তার ইনকাম ২০ থেকে ৩০ হাজারে উঠে যায়।  একদম ৫০% উন্নতি।  সে বলেছিল যে, তার এই উন্নতির পেছনে তার নতুন শেখা জিনিসগুলোর দারুন অবদান ছিল।  পরের বছর সে ৩০ হাজারের ৩%, মানে ৯০০ ডলার নিজের উন্নতির পেছনে ব্যয় করে।  সেই বছর সে ৫০ হাজার ডলার আয় করে। এবং নিজেই হিসেব করে দেখতে পায় যে, এবারও তার নতুন শেখা বিষয়গুলো তাকে বেশি অর্থ আয় করতে সাহায্য করেছে।  পরের বছর সে ৩ এর জায়গায় ৫% নিজের দক্ষতা ও জ্ঞান বাড়ানোর পেছনে ব্যয় করার সিদ্ধান্ত নেয়, এবং ২৫০০ ডলার নিজের শিক্ষার পেছনে ব্যয় করে।  সে আরও সেমিনারে যোগ দেয়, প্রচুর নতুন নতুন অডিও ও ভিডিও টিউটোরিয়াল কেনে, এবং একজন পার্টটাইম সেলস কোচকেও নিয়োগ দেয়।  সেই বছর তার ইনকাম দাঁড়ায় ১ লাখ মার্কিন ডলার!

ফর্মূলার কার্যকারিতা দেখে সে সিদ্ধান্ত নেয় সেই বছর তার মোট আয়ের ১০% নিজের উন্নতির পেছনে ব্যয় করার।  এরপর থেকে সে নিয়মিত প্রতি বছর নিজের আয়ের ১০% শেখার পেছনে বিনিয়োগ করছে।  

আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, “১০% নিজের পেছনে বিনিয়োগ করায় তোমার আর্থিক অবস্থার কতটা উন্নতি হয়েছে?”

সে হেসে উত্তর দিয়েছিল, “আমি গত বছর ১ মিলিয়ন ডলারের বেশি আয় করেছি।  এই বছরও আমি সেই আয়ের ১০% (১ লাখ ডলার) নিজের শেখার পেছনে বিনিয়োগ করেছি”  

আমি বললাম, “এতো টাকা তুমি কিভাবে পারসোনাল ডেভেলপমেন্টের পেছনে খরচ করবে?”

তার উত্তর ছিল, “এটা আসলেই কঠিন! আমি জানুয়ারি থেকে নিজের উন্নতির পেছনে খরচ করা শুরু করেছি, যাতে বছরের শেষে পুরো টাকাটি শেষ হয়।  আমি একজন ইমেজ কোচ, সেলস কোচ, এবং স্পিকিং কোচ রেখেছি।  আমার বাসার বিশাল লাইব্রেরি বিক্রয় আর পার্সোনাল সাকসেস বিষয়ে যত বই, অডিও, ভিডিও টিউটোরিয়াল আছে – সব দিয়ে ভরা।  আমি দেশে ও দেশের বাইরের কনফারেন্স ও ট্রেনিং এ যাই।  আর আমার ইনকাম প্রতি বছর শুধু বেড়েই চলেছে”


লেখকের এই গল্প থেকে আপনি নিশ্চই বুঝতে পারছেন যে, ৩% দিয়ে আপনাকে কি করতে হবে? আপনি যে ক্ষেত্রেই কাজ করেন না কেন, সেই বিষয়ে অবশ্যই এমন অনেক বই আছে, যা আপনি পড়েননি।  যেখান থেকে আপনি নতুন জ্ঞান নিতে পারেন।  এছাড়া ট্রেনিং প্রোগ্রাম, ভিডিও টিউটোরিয়াল তো আছেই।  আজকাল ইন্টারনেটের কারণে এগুলো পাওয়া আরও সহজ হয়ে গেছে।

আপনি যত দিন না আপনার ক্ষেত্রের সেরা ২০% এর গড় আয় ছুঁতে পারছেন – ততদিন পর্যন্ত এই ৩% ফর্মূলা চালিয়ে যেতে থাকুন।  লেখকের বইয়ের ওই যুবকের মত, আপনিও হাজার থেকে লক্ষ, লক্ষ থেকে কোটিতে যেতে পারবেন।  বোনাস হিসেবে থাকবে একটা গোছানো জীবন, যেখানে আপনার মনের মত করে সবকিছু হবে।  

অধ্যায়ের শেষে ব্রায়ান ৩টি ছোট টিপস দিয়েছেন, যেগুলো এই কাজটি গুছিয়ে করতে আপনাকে সাহায্য করবে। 

# ০১. পড়ুন

নিজের সেক্টরের বিষয়ে ১ ঘন্টা পড়াশুনা করুন।  লেখক এখানে টিভি আর রেডিও অফ করতে বলেছেন, সাথে নিউজ পেপারকে দূরে রাখতে বলেছেন।  আমরা আপনাকে মোবাইলও পাশের রুমে রাখতে বলছি।  পারলে বন্ধ করে দিন।  ইন্টারনেটের যুগে বইটি লেখা হলে, তিনিও এই কথা বলতেন।  দিনের কাজ শুরু করার আগেই পড়া শেষ করুন।  এতে করে দিনের কাজ শুরুর আগেই আপনার মাথায় নতুন আইডিয়া থাকবে, যা আপনি কাজে লাগাতে পারবেন।

# ০২. শুনুন

লেখক বলেছেন, কর্মস্থলে যাওয়ার সময়ে ওয়াকম্যান বা গাড়ির সিডি প্লেয়ারে অডিও টিউটোরিয়াল শুনতে।  এখন মোবাইল ফোনের কল্যানে এটা আরও সোজা হয়ে গেছে।  আপনি যে সেক্টরেই কাজ করেন না কেন, ইউটিউবেই সেই সেক্টরের অনেক শিক্ষামূলক ভিডিও আছে, যেগুলো আপনি অডিও বানিয়ে রাখতে পারেন এবং শুনতে পারেন।  ভিডিও ডাউনলোড করেও রাখতে পারেন।  এছাড়া ইন্টারনেটে টাকার বিনিময়েও অনেক অডিও লার্নিং প্রোগ্রাম পাওয়া যায়। যেগুলো শুনে শুনে শেখার জন্যই ডিজাইন করা হয়েছে।  পড়া ও শোনা এই আইডিয়াগুলো আপনি সেইদিনই কাজে লাগাতে পারবেন।  এবং সেগুলোর কার্যকারিতা দেখে আপনি নিজেই অবাক হয়ে যেতে পারেন।  প্রতিটি দিনই আপনি আগের দিনের চেয়ে ভালো পারফর্ম করতে পারবেন।

# ০৩. কোর্স করুন

দক্ষতা আর জ্ঞান বাড়ানোর জন্য কোর্স করার বিকল্প নেই।  আপনি যখন নিজের আয় করা টাকা দিয়ে কিছু শিখবেন – তখন সেটার পেছনে আগ্রহ আর পরিশ্রম হবে অন্যরকম।  সেই সাথে আপনি সরাসরি এক্সপার্টদের কাছথেকে শিখতে পারবেন।  অডিও লার্নিং এবং বই পড়ার উপকারিতা অনেক।  কিন্তু কোর্স করার একটি উপকারিতা আছে, যা আপনি সেগুলো থেকে পাবেন না।  কোর্সে অংশ নিলে বা সরাসরি কোনও এক্সপার্টের কাছ থেকে শিখলে আপনি তাদের প্রশ্ন করে অনেক কিছু জানতে পারবেন।  কিছু না বুঝলে তাদের কাছথেকে বুঝে নিতে পারবেন।  এছাড়া, কোর্সে ভর্তি হলে নিজের সেক্টরের আরও অনেকের সাথে আপনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে পারবেন।  সেইসাথে নিজের সেক্টরের অনেক মানুষের সাথে আপনার পরিচয় হবে – যার ফলে পরে আপনি অনেক সুবিধা পাবেন।

শেষ কথা:

লেখক বলেন শেখার ক্ষমতা অনেকটা সুদের মত।  এটা চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়ে। কিন্তু সুদ খারাপ হলেও, শেখা সবদিক দিয়েই ভালো। আপনি যত শেখার চেষ্টা করবেন, আপনার বোঝার ও শেখার ক্ষমতা তত বাড়বে।  আপনার মস্তিষ্কের অনেক বন্ধ অংশ খুলে যাবে।  অনেক কঠিন কঠিন বিষয় আপনি অনেক সহজে বুঝতে পারবেন।  আপনি দিনে দিনে আরও বুদ্ধিমান ও স্মার্ট হয়ে উঠবেন।  আপনার মেমোরি ও চিন্তা করার ক্ষমতা বাড়বে।  একটি বিষয়ে যত জানবেন – তত বেশি দিক দিয়ে আপনি সেই বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত ব্যপারগুলোকে ব্যাখ্যা করতে পারবেন। যে কোনও জিনিস আপনি অন্যদেরকে সহজে বোঝাতে পারবেন।  এর ফলে আপনার কাজ ও কমিউনিকেশনের মান বাড়তে থাকবে।  এবং সেই সাথে আপনার আয়ও বাড়তে থাকবে।  এবং ধীরে ধীরে আপনি আপনার সেক্টরের সেরা ২০% এর একজন হয়ে উঠবেন। লেখক পরামর্শ দেন যে সেরা ২০% এর একজন হওয়ার পরও আপনি শেখা চালিয়ে যান। তাহলে  আপনি আরও ওপরে উঠতে পারবেন। হতে পারবেন সেরাদের সেরা মানুষ। 

আর সেই সেরা মানুষ হওয়ার পথে এই লেখাটি যদি আপনাকে একটু হলেও সাহায্য করতে পারে – তবেই আমাদের প্রচেষ্টা সফল বলে ধরে নেব।

লেখাটির ব্যাপারে আপনার যে কোনও মতামত আমাদের কমেন্ট করে জানান।  আপনার প্রতিটি মতামতই আমাদের কাছে অমূল্য। 

আপনার নিজের যদি এমন কোনও ফর্মূলা জানা থাকে, তবে আপনিও লড়াকুর জন্য লিখতে পারেন।  মোটিভেশনাল ও সেলফ ডেভেলপমেন্ট ক্যাটাগরির যে কোনও ভালো লেখা আমরা আপনার নাম সহ লড়াকুতে প্রকাশ করব।  আপনার লেখা ইমেইল করুন এই এ্যাড্রেসে: Write@test.edaning.com.

আর সব শেষে, যদি মনে হয় এই লেখাটি পড়ে অন্যরাও উপকৃত হবেন, তবে শেয়ার করে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন।

এই ধরনের আরও লেখার জন্য নিয়মিত আমাদের সাথে থাকুন।  সাফল্যের পথে লড়াকু সব সময়ে আপনার সাথে আছে।

পোস্টটি শেয়ার করুন !